• নোংরা জল আটকে মাঝপথে, গঙ্গা প্রকল্পে সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ
    আনন্দবাজার | ০৭ নভেম্বর ২০২৫
  • গঙ্গা ও তার উপনদীগুলির দূষণ রোধে রাজ্য সরকার যে বিশাল কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, কলকাতা-সহ রাজ্যের অনেক জায়গাতেই সেই তরল বর্জ্য পরিশোধন প্রকল্পের কাজসম্পূর্ণ হতে সময় লাগছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর।

    কিছু দিন আগে নির্দেশিকা জারি করে দফতর জানিয়েছে, প্রকল্পগুলির কাজ সময় মতো শেষ না হওয়া, পাইপলাইন ও পাম্পিং স্টেশনের নির্মাণে দেরি এবং তরল নিকাশি পরিশোধনাগার (সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা এসটিপি) অসম্পূর্ণ অবস্থায় চালু করা— এই সমস্যাগুলিই এখন মাথাব্যথা।

    রাজ্য সরকারের তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির অধীনে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ),কলকাতা পুরসভা এবং দফতর-অধীনস্থ আরও কয়েকটি সংস্থা গঙ্গা ও তার উপনদীগুলির জলের মান উন্নয়নের জন্য একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুনএসটিপি তৈরি, পাইপলাইন নেটওয়ার্ক বসানো, পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ এবং পাইপলাইনের সংযোগ ও অভিমুখ পরিবর্তনের পরিকাঠামো তৈরি—যাতে শহর ও শহরতলিরসমস্ত বর্জ্য জল সংগ্রহ করে পরিশোধনাগারে শোধন করে নদীতে ফেলা যায়।

    কিন্তু রাজ্যের নিজস্ব রিপোর্টেই উঠে এসেছে, অনেক জায়গায় শোধনাগার তৈরি হলেও তার সঙ্গে যুক্ত পরিকাঠামো অসম্পূর্ণ। সে কারণে গত অগস্টে দফতরের তরফে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছিল। সেখানেই বলা হয়, অনেক প্রকল্পে শোধনাগার নির্মাণ নির্ধারিত সময়ে সম্পূর্ণ হলেও পাইপলাইন, পাম্পিং স্টেশন এবং পাইপলাইনের সংযোগ ও অভিমুখ পরিবর্তনের কাজ শেষ হচ্ছে না। ফলে বর্জ্য জল ঠিক ভাবে শোধনাগারে পৌঁছচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে আংশিক ভাবে চালু রাখতে হচ্ছে।

    প্রশাসনের মতে, এর ফলে প্রকল্পগুলি পুরো কাজ করতে পারছে না। পরিশোধনাগারগুলির ক্ষমতা অনুযায়ী সেখানে নোংরা জল পৌঁছচ্ছে না। এ ভাবেই চলছে। পরিস্থিতি এমন যে, পুরো ক্ষমতা চালুর আগেই সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন পড়ছে। এতে প্রকল্পের দক্ষতা কমছে এবং সরকারি টাকার অপচয় ঘটছে। তাই নতুন করে সব সংস্থাকেনির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পরিশোধনাগার এবং তার সঙ্গে যুক্ত সব পরিকাঠামো একসঙ্গে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

    সরকার স্পষ্ট করেছে যে, তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি একটি সময়সীমাবদ্ধ প্রকল্প, তাই কাজের প্রতিটি ধাপে কঠোর নজরদারি জরুরি। প্রকল্প শুরুর আগে সম্ভাব্য সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে এবং পর্যাপ্ত লোকবল, উপকরণ ও যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রাখতে হবে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “প্রকল্পে সময় ও অর্থের অপচয় রোধ করতে প্রতিটি ধাপে সতর্কতা ও সমন্বয় বজায় রাখতে হবে।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)