১০৩ কোটির বালি বিক্রি, অ্যাকাউন্টে ঢুকল ১৩০ কোটি! কলকাতার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ ইডির
আনন্দবাজার | ০৭ নভেম্বর ২০২৫
বেআইনি বালি পাচার মামলায় কলকাতার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিপুল আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ আনল ইডি। বৃহস্পতিবার রাতে ব্যবসায়ী অরুণ সরাফকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। শুক্রবার ফের তাঁকে বিচার ভবনে হাজির করানো হয়। অভিযোগ, নির্দিষ্ট সংস্থার মাধ্যমে বালি পাচার করেছেন অরুণ। নিজের নামে কোনও হিসাব রাখেননি। ১০৩ কোটি টাকার বালি বিক্রির কথা বললেও তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ১৩০ কোটি টাকা!
অরুণ কলকাতার একটি নামী মাইনিং সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ, বেআইনি ভাবে বালি খনন এবং বিক্রি করেছেন তিনি। ভুয়ো ই-চালান ব্যবহার করেছেন। সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং সরকারি নিয়মে ফাঁকি দিয়েছেন। তাঁকে ১৩ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছেন ইডি আধিকারিকেরা। অরুণের আইনজীবী কেন্দ্রীয় সংস্থার বক্তব্যের বিরোধিতা করলেও শুক্রবার জামিনের আবেদন করেননি।
ইডি আদালতে জানিয়েছে, ২০২০ সাল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট মাইনিং সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন অরুণ এবং তাঁর মা। বর্তমান ডিরেক্টরেরাও তাঁর নির্দেশেই চলতেন। তিনি যেখানে বলতেন, বাকিরা স্বাক্ষর করে দিতেন। ওই সংস্থার অন্য কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদে ইডি এই তথ্য জানতে পেরেছে। বেআইনি বালি পাচার নিয়ে রাজ্য পুলিশের কাছে মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতে ইডি ইসিআইআর করে তদন্ত শুরু করেছে।
কী ভাবে দুর্নীতির কাজ চালাতেন অরুণ? ইডির দাবি, সংস্থার নামে ই-চালান তৈরি করে বালি খোঁড়া এবং বিক্রি করা হত। প্রতি চালানে থাকত কিউআর কোড। রাজ্য পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, সেই সমস্ত চালান ভুয়ো। অভিযোগ, ২০২৪ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মোট ৬০ কোটি টাকার কোনও হিসাব অরুণের সংস্থা দেখাতে পারেনি। তাঁকে মোট তিন বার তলব করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। প্রথম বার হাজিরা দিলেও দ্বিতীয় বার তিনি হাজিরা এড়ান। তৃতীয় দিন হাজিরা দিতে এলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
অরুণের আইনজীবীর দাবি, রাজ্য পুলিশের চার্জশিটে তাঁর মক্কেলের নাম ছিল না। বিচার শেষে মামলার অভিযুক্তেরাও খালাস পেয়ে গিয়েছেন। এ ছাড়া, ই-চালান জালিয়াতি নিয়ে ইডির তদন্তের এক্তিয়ার আদৌ আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অরুণের আইনজীবী।