নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মহাত্মা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অরবিন্দ ঘোষ এবং দামোদর বিনায়ক সাভারকর। বন্দেমাতরমের দেড়শো বছর পূর্তি পালিত হবে বছরভর। তারই সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে বন্দেমাতরম প্রসঙ্গে উঠে এল এই চারজনের নাম। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে উচ্চারণ করলেন না সেই সব বিপ্লবীদের, মৃত্যুর আগে যাঁদের অন্তিম কথাই ছিল বন্দে মাতরম। রবীন্দ্রনাথ বন্দেমাতরমকে আখ্যা দিয়েছিলেন ভারতের স্বাধীনতার প্রথম মন্ত্র। অরবিন্দ ঘোষ বলেছিলেন, বন্দেমাতরম নিছক একটি গান নয়, প্রত্যেকের আত্মাকে জাগ্রত করার এক শক্তিশ্লোক। মহাত্মা গান্ধী ১৯২৭ সালে বলেছিলেন, বন্দে মাতরম অখণ্ড এবং ঐক্যবদ্ধ ভারতের একটি সুস্পষ্ট চিত্র অঙ্কন করেছে। এই নামগুলির পাশাপাশি মোদি এরপর বলেন, বীর সাভারকর যখন বিদেশে ছিলেন, সেই সময় তিনি বন্দেমাতরম উচ্চারণ করার পর অন্যদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতেন। মোদির কথায়, এভাবেই স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে বন্দেমাতরম অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত। মোদি বলেছেন, প্রতি সঙ্গীতের একটি অন্তর্নিহিত আত্মা থাকে। বন্দেমাতরমের অন্তর্নিহিত আত্মা হল ভারতমাতা। ভারতের হৃদয় হল, ভারত মাতা কি জয় এবং বন্দেমাতরম। বন্দেমাতরমের মধ্যে মিশে রয়েছে সরস্বতী, লক্ষ্মী ও দুর্গার মিলিত জয়ধ্বনি। মোদি প্রত্যাশিতভাবেই নিয়ে এসেছেন ১৯৩৭ সালের প্রসঙ্গ। যে সময় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল তারা ভারতের জাতীয় গান হিসেবে বাছাই করে নেবে বন্দেমাতরমকে। এই গানের মধ্যে দুর্গার বন্দনা আছে, তাই আপত্তি উঠেছিল মুসলিম লিগের পক্ষ থেকে। সেই কারণেই বন্দেমাতরমের প্রথম দুই স্তবককে বেছে নেওয়া হয়েছিল জাতীয় গান হিসেবে। এই প্রসঙ্গটি বিস্তারিত উত্থাপিত না করলেও মোদি পরোক্ষে তোপ দাগতে ভোলেননি কংগ্রেসের ওই সিদ্ধান্তকে। তিনি বলেন, ১৯৩৭ সালে এই মহান গানকে কাটাছেঁড়া করে বস্তুত দেশভাগের বীজ বপন করে দেওয়া হয়েছিল। মোদি প্রশ্ন করেন, এই সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হল? আজকের প্রজন্মের এই ইতিহাসও জানা দরকার। এরপরই সরাসরি রাজনীতির অনুষঙ্গ নিয়ে এসে মোদি বলেন, এই বিভাজনের মানসিকতা কিন্তু এখনও রয়েছে আমাদের আশেপাশে।