• ঝাড়গ্রামে পাঠাগারের বই কিনতে জেলার ৬৯টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলকে এক লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ
    বর্তমান | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: ডিজিটাল জগতের হাতছানির জেরে বই পড়ার অভ্যাস ক্রমশ কমছে। তাই পড়ুয়াদের জ্ঞানের বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে ঝাড়গ্রাম জেলার ৬৯টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের পাঠাগারের বই কেনার জন্য এক লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করেছে শিক্ষাদপ্তর। গত বছর স্কুলপ্রতি ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। রাজ্য সরকার পড়ুয়াদের বই পড়ার উদ্যোগে নানা পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে।

    ঝাড়গ্রাম জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক শক্তিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, পাঠাগারের বই কেনার জন্য এবছর বরাদ্দ টাকার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। বরাদ্দপ্রাপ্ত স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে পড়ুয়াদের জন্য জ্ঞান-বিজ্ঞান, মনীষীদের জীবনী, মেধা অন্বেষণের বই কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

    জেলার ৫৮টি সরকার পোষিত ও ১১টি সরকারি স্কুলকে এই টাকা দেওয়া হয়েছে। জেলা শিক্ষাদপ্তর থেকে স্পষ্ট নির্দেশ, বরাদ্দ টাকায় শুধু বই কিনতে হবে। স্কুলের অন্য খাতে কোনওভাবে ব্যয় করা যাবে না। প্রতিটি স্কুল বরাদ্দ টাকায় কী কী বই কিনছে, ভাউচারের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হবে। স্কুলগুলিকে এলাকার দোকান থেকে বই কেনার জন্য বলা হবে। জেলার বেশকিছু বিদ্যালয় বরাদ্দকৃত পুরো টাকায় বই কেনেনি বলে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বিষয়টি মাথায় রেখে জেলা শিক্ষাদপ্তর এবার বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে। একাধিক স্কুল গত দু’বছর ধরে পাঠাগারের বই কেনার বরাদ্দ টাকা পায়নি। তবে, স্কুলগুলিকে বরাদ্দ অর্থ দেওয়ার নির্বাচন পদ্ধতি কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। লাইব্রেরিয়ান না থাকায় একাধিক স্কুলকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। স্মার্টফোনের যুগে পাঠ্যবই ছাড়া গল্পের বই পড়ার অভ্যাস কমে গিয়েছে।

    জেলার শিক্ষক মহল অবশ্য প্রথাগত বই পড়ার পাশাপাশি এখন ডিজিটাল ফরম্যাটেও বই পড়ার উৎসাহ দিচ্ছে। ঝাড়গ্রাম নেতাজি আদর্শ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অপর্নেশ মিশ্র বলেন, পাঠাগারের জন্য এবছর এক লক্ষ টাকা পেয়েছি। বরাদ্দ টাকায় পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি গল্পের বই কেনা হবে। পড়ুয়ারা স্কুলের পাঠাগার থেকে পাঠ্য ও গল্পের বই নেয়। স্কুলের তরফে পড়ুয়াদের বই পড়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়। ঝাড়গ্রাম ননীবালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তিপদ বিশুই বলেন, পাঠাগারের বই কেনার জন্য গত দু’বছর কোনও টাকা পাইনি। জেলা শিক্ষাদপ্তরকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। অনেক স্কুল টাকা পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের স্কুল পাচ্ছে না। এর কারণ কী, বুঝতে পারছি না। বিনপুর-১ ব্লকের আঁধারিয়া রাজবল্লভ হাইস্কুলের টিচার ইনচার্জ অর্ধেন্দু সেনাপতি বলেন, গত দু’বছর আমাদের স্কুলে পাঠাগারের বই কেনার জন্য টাকা পাইনি। পাঠ্য ও অন্যান্য বই কেনা যাচ্ছে না। স্কুলে লাইব্রেরিয়ান না থাকায় পাঠাগার পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে।

    ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুমন সাহু বলেন, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রতিটি স্কুল বরাদ্দ টাকা ধাপে ধাপে পাবে বলে জানানো হয়েছে। গত বছর কিছু স্কুল বরাদ্দ টাকার সবটা বই কিনতে খরচ করেনি বলে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। স্থায়ী সমিতিতে এবিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথা বলা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)