• ভর সন্ধ্যায় সালারের গ্রামে ভালুক! লাঠি হাতে রাত জাগলেন বাসিন্দারা
    বর্তমান | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কান্দি: ভরসন্ধ্যায় গ্রামের রাস্তায় ভালুক! এমন দাবিকে ঘিরে বৃহস্পতিবার রাতে  সালার থানার পূর্বগ্রামে রাতভর তোলপাড় চলল। লাঠি হাতে গ্রাম পাহারাও দিলেন অনেকেই। খবর পেয়ে রাতেই গ্রামে যায় সালার থানার পুলিশ। বিস্তর খোঁজাখুঁজি করে তারা। কিন্তু, কোথাও কোনও ভালুকের দেখা মেলেনি। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সহ গ্রামবাসীদের একাংশের ধারণা, গ্রামবাসীদের মধ্যে ভীতির বাতাবরণ তৈরি করতে কেউ বা কারা ভালুকের মতো সেজে বাচ্চা ও মহিলাদের ভয় দেখিয়েছে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ গ্রামের দিঘিরপাড়ার বছর বারোর তৈয়ব শেখ বাড়ি থেকে বের হয়ে মসজিদে যাচ্ছিল নামাজ পড়তে। যাওয়ার আগে পাড়ার সমবয়সি আরও দুই বালককেও সে ডেকে নেয়। তিনজনে মাঠের দিকের রাস্তা ধরে মসজিদের দিকে পা বাড়িয়েছে। আচমকা কিছুটা দূরে তারা একটি ভালুককে দেখতে পায়। তৈয়ব বলছিল, ‘প্রথমে আমরা জন্তুটিকে শিয়াল ভেবেছিলাম। পরে ভাল করে দেখি, হাতে বড় বড় নখ, গোটা গায়ে কালো লোম। মুখটাও ছুঁচাল। আমাদের দেখে শুধু বুক চাপড়াচ্ছিল। একেবারে ভালুকের মতো লাগছিল।’

    জন্তুটিকে দেখে ওই তিন বালক পাড়ার মহিলাদের চিৎকার করে ডাকতে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গেই কয়েকজন মহিলা বিড়ি বাঁধার কাজ ফেলে বেরিয়ে আসেন। তাঁরাও জন্তুটিকে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। গৃহবধূ আক্তারা বিবি বলছিলেন, ‘ছেলেদের চিৎকার শুনে টর্চ হাতে বাড়ি থেকে বের হই। জন্তুটির দিকে টর্চ মারতেই দেখি বীভৎস চেহারা। ভয় পেয়ে যাই আমরা। ফের ওর গায়ে টর্চের লাইট ফেলতেই এক লাফে ধানের জমিতে গিয়ে পড়ে। আমরাও ভয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়ি। সকলে মিলে চিৎকার শুরু করে দিই।’

    ওই চিৎকার শুনে গ্রামের প্রচুর লোকজন লাঠিহাতে বাড়ি থেকে বের হন। মাঠজুড়ে তন্নতন্ন করে ভালুকের খোঁজে নামেন তাঁরা। কিন্তু রাত কেটে ভোর হলেও জন্তুটির দেখা মলেনি। বাসিন্দা সফিকুল শেখ বলেন, ‘এতজন মিলে ভালুক দেখেছেন, এটা মিথ্যা হতে পারে না। গ্রামের সবা‌ই আতঙ্কে ভুগছেন। তাই দল বেঁধে রাতভর গ্রাম পাহারা দিয়েছি।’

    এদিকে, ঘটনার কথা জানতে পেরে গ্রামে আসে সালার থানার পুলিশ। পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিজ্ঞতা জানার চেষ্টা করে। পরে তারাও মাঠের দিকে তল্লাশি চালায়। কিন্তু ভালুকে খোঁজ কোথাও মেলেনি। গ্রামের বাসিন্দা তথা স্থানীয় তালিবপুর পঞ্চায়েত প্রধান রবি শেখ বলেন, ‘জনবহুল এলাকায় ভালুক আসবে, এটা চিন্তা করাও ভূল। যা মনে হয়েছে, তাতে কেউ ভালুক সেজে বাসিন্দাদের ভয় দেখিয়েছে। আর যারা একাজ করেছে তারা সম্ভবত দুষ্কৃতী। ওরা মাঠের দিকে যাতায়াত বন্ধ করতে চাইছে। রাতের দিকে মাঠের রাস্তায় যাতায়াত বন্ধ হলে অসামাজিক কাজে সুবিধা হবে।’
  • Link to this news (বর্তমান)