• কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে স্বজনপোষণের অভিযোগ কর্মীর
    বর্তমান | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ভরা সভায় দলের মধ্যে স্বজনপোষণ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিজেপির এক সাধারণ কর্মী। তাঁর অভিযোগ, দলের অন্দরে চলছে পক্ষপাতিত্ব, স্বজনপোষণ আর নিচুতলার কর্মীদের প্রতি অবহেলা। শুক্রবার রানাঘাটে বিজেপির কর্মিসভায় এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ল বিজেপি নেতৃত্ব। ভোটের মুখে প্রকাশ্যে এমন অভিযোগ ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয়েছে জোর গুঞ্জন।

    শুক্রবারের ওই সভায় নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার তিন বিধানসভা— রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম, রানাঘাট দক্ষিণ ও চাকদহের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। সভার শুরু থেকেই বিশৃঙ্খলা এবং হই হট্টগোল চলছিল। একসময়ে অধৈর্য হয়ে পড়েন মিঠুন নিজেই। তিনি বলেন, আমি এখানে সিনেমার শুটিং করতে আসিনি। আমাকে একটু ‘ইজ্জত’ দিন। নিজে বক্তব্য রাখার পর তিনি দলের কর্মীদের বক্তব্য জানতে চান। সুযোগ পেয়েই এক কর্মী অভিযোগ করেন, অনেক নেতা নিজেদের লোকদের সুযোগ দিচ্ছেন। তাঁরাই পদ পাচ্ছেন। আমাদের মতো সাধারণ কর্মীদের কোনও গুরুত্ব নেই। দলের মধ্যে স্বজনপোষণ চলছে। তাঁর এই বক্তব্য শুনেই শুরু হয় ফিসফিস, গুঞ্জন। কেউ তাঁকে থামানোর চেষ্টা করলেও ততক্ষণে সভাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে অস্বস্তি। কর্মীর অসন্তোষের উত্তর দিতে মিঠুন মাইক্রোফোন ধরিয়ে দেন জেলা সভাপতির হাতে। 

    জেলা নেতৃত্ব পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। কর্মসূচি শেষে নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অর্পণা নন্দীর বক্তব্য, দলে পদের সংখ্যা সীমিত, কর্মী অনেক। ফলে কিছুটা অসন্তোষ থাকতেই পারে। এটা বড় কোনও সমস্যা নয়। প্রত্যেকে দলের জন্য কাজ করতে চাইছেন। আমাদের থেকে তৃণমূল অনেক বেশি দ্বন্দ্ব এবং গোষ্ঠীকোন্দল রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, ভোটের আগে বিজেপির ভিতরে অনৈক্য, দ্বন্দ্ব ও হতাশার বহিঃপ্রকাশ শুক্রবারের ঘটনা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোটের মুখে কর্মীভিত্তিক দলে এমন অসন্তোষ সামনে আসা নেতৃত্বের কাছে বড় সংকেত। সংগঠন ধরে রাখতে এখনই কঠোর পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা। এদিকে, সাংবাদিক সম্মেলনে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, পাকিস্তান-বাংলাদেশ অথবা আফগানিস্তান থেকে যদি কোনও হিন্দু আসেন তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এমনকী ভারতীয় মুসলিমদেরও নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে কীভাবে হিন্দু চিহ্নিত হবে? বিষয়টা নিয়ে মিঠুন বলেন, ধর্মীয় সার্টিফিকেটের মাধ্যমে চেনা যাবে। যদিও সেই সার্টিফিকেট ভারত সরকার দেবে না অন্য কোনওভাবে জোগাড় করতে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি তিনি। একই সঙ্গে বেসুরো বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে বলেন, অভিজিৎদাকে নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। ওঁকে খালি বলব ময়দানে নেমে একটু দেখতে।
  • Link to this news (বর্তমান)