বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে চাঙড় খসে পড়ল মা ও সদ্যোজাতের উপর, আতঙ্ক, সব রোগীকে সরানো হল অন্য ওয়ার্ডে, শুরু মেরামত
বর্তমান | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে ছাদের চাঙড় খসে পড়ল মা ও সদ্যোজাতের উপর। ওইদিন হাসপাতালের পোস্ট নেটাল ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন মা ও সদ্যোজাত। ছাদের এক কোণ থেকে হঠাৎ একটি চাঙড় খসে বেডের উপর পড়ে। চাঙড়ের আঘাত লাগে মায়ের হাতে। চাঙড়ের কিছুটা অংশ ছিটকে শিশুর মাথায় লাগে। ঘটনায় ওয়ার্ডের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। শিশুটির কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকরা তাকে এসএনসিইউতে নিয়ে যান। আঘাত তেমন গুরুতর না হওয়ায় কিছুক্ষণ পরেই তাকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার সকালে ওই ওয়ার্ডের সব রোগীকে অন্য ওয়ার্ডে সরানো হয়। তড়িঘড়ি ছাদ মেরামতির কাজ শুরু করা হয়।
বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের সুপার শুভঙ্কর কয়াল বলেন, হাসপাতালের পোস্ট নেটাল ওয়ার্ডটি বহু পুরনো। ছাদের কিছুটা চাঙড় খসে এক রোগীর বেডে পড়ে। তবে, তাতে মা ও শিশুর তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি। তবুও শিশুটিকে এসএনসিইউতে নিয়ে গিয়ে তাঁর সুস্থতা পরীক্ষা করানো হয়। শুক্রবার সকাল থেকেই ওই ওয়ার্ডের রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে মেরামতির কাজ শুরু করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষ্ণুপুরের নামো মাজুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা পার্থ সর্দারের স্ত্রী পূজাদেবী বুধবার সন্ধ্যায় সন্তান সম্ভবা অবস্থায় বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিনই রাতে তিনি একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। তারপর সদ্যোজাত সন্তান ও মাকে পোস্ট নেটাল ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে ছাদের একটি চাঙড় খসে তাঁদের বেডের উপর পড়ে। এই ঘটনায় ওয়ার্ডে আতঙ্ক তৈরি হয়। শিশুর ক্ষতির আশঙ্কায় পূজাদেবী কান্নাকাটি শুরু করেন। খবর পেয়ে চিকিৎসকরা শিশুটিকে এসএনসিইউ ওয়ার্ড নিয়ে যান। সেখানে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। যদিও সেরকম ক্ষতি না হওয়ায় পূজাদেবী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনের মনে স্বস্তি ফেরে।
সদ্যোজাত শিশুর মা পূজা সর্দার বলেন, আমি মেয়েকে নিয়ে ওয়ার্ডের এক কোণের বেডে শুয়েছিলাম। হঠাৎ করে ছাদ থেকে একটি বড় চাঙড় খসে বেডের উপর পড়ে। তার কিছুটা অংশ আমার হাতে লাগে। কিছুটা ছিটকে মেয়ের মাথায় লাগে। ডাক্তারবাবুরা মেয়েকে পরীক্ষা করে কিছু হয়নি বলে জানিয়েছেন। তবে, পুরো চাঙড়টা মেয়ের উপর পড়লে বড় বিপদ হয়ে যেত।
শিশুটির বাবা পার্থবাবু বলেন, হাসপাতালের বিপজ্জনক রুমে রোগীদের কেন রাখা হয়েছে, তা আমরা বুঝতে পারছি না। অল্পের জন্য আমার স্ত্রী ও মেয়ে রক্ষা পেয়েছে। নিজস্ব চিত্র