পানশালার মালিক ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর বাড়ি সহ ৭ স্থানে ইডি হানা
বর্তমান | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মানব পাচারের একটি মামলায় শুক্রবার ইডি এক পানশালা ব্যবসায়ী, রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিক, ইঞ্জিনিয়ার সহ একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়িতে একযোগে তল্লাশি চালাল। অভিযোগ, মানব পাচারের টাকা বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চালানোর পর এদিন তল্লাশি শুরু হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে লেনদেন সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি।
২০১৫ সালে বাগুইআটি থানা মানব পাচারের একটি মামলা রুজু করে। অভিযোগ, পানশালার ব্যবসার আড়ালে মেয়েদের বিভিন্ন রাজ্যে পাচার করা হয়েছে। বিদেশেও কিশোরী, তরুণীদের পাচার করেছে এই চক্র। বিনিময়ে কোটি কোটি টাকা এসেছে হাওলার মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে এই মামলার তদন্তভার নেয় ইডি। তদন্তে নেমে তারা দেখে, এই পানশালায় বিভিন্ন বয়সের তরুণীরা আসতেন। সেখান থেকে তাঁদের কাজের টোপ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পাচার করে দেওয়া হতো। রীতিমতো সিন্ডিকেট গড়ে চলছিল এই কারবার। তদন্তে আরও জানা যায়, পানশালা মালিকের সঙ্গে দমদম নাগেরবাজারের এক ইঞ্জিনিয়ারের যোগাযোগ রয়েছে। তাঁর মাধ্যমে পাচার থেকে আসা টাকা বিভিন্ন ব্যবসায় খাটানো হচ্ছে। ওই ইঞ্জিনিয়ার ফ্ল্যাট কিনেছেন নগদে। সেই কাজে তাঁর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন ওই রিয়েল এস্টেট সংস্থার মালিক। তাঁকে সামনে রেখে ফ্ল্যাট কেনা-বেচা হচ্ছে। তাঁর কাছেই টাকা গচ্ছিত রাখছেন ওই ইঞ্জিনিয়ার। ইডি নথি ঘেঁটে জেনেছে, ওই ব্যবসায়ী আবার দু’লক্ষ টাকা খাতায়কলমে ধার দিয়েছিলেন ওই ইঞ্জিনিয়ারকে। বাস্তবে এই টাকা অবৈধভাবে আসা অর্থ বলে জানা যাচ্ছে। মানব পাচারের টাকা বিনিয়োগ হয়েছে এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর কাছেও। তাঁর বিভিন্ন প্রজেক্টে কালো টাকা খাটছে। ইডি সমস্ত জায়গা থেকে লেনদেনের বিপুল নথি উদ্ধার করে। তারা আরও জানতে পেরেছে, প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা এসেছে মানব পাচার করে। পুরো টাকাটাই আসত পানশালা মালিকের কাছে। এরপর তিনি বিভিন্ন জায়গায় এই টাকা ‘পার্ক’ করে রাখতেন। পানশালা মালিক, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীসহ সবাইকেই নোটিশ পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হচ্ছে বলে খবর।