ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিতর্কের আবহের উঠে এল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এনুমারেশন ফর্ম পূরণের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, মমতা ‘চিহ্নিত ভোটার’ বা মার্কড ইলেক্টর। ফলে তাঁর নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত থাকে।
কমিশন সূত্রে খবর, শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, দেশের প্রধানমন্ত্রী, সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং ওজনদার নেতা-মন্ত্রীরা এই তালিকায় থাকেন। তাঁদের সম্পর্কে আলাদা করে তথ্য রেখে দেওয়া হয়। কমিশনের এক আধিকারিক জানান, স্বয়ংক্রিয়ভাবেই প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীদের নাম কমিশনের ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত হয়। তার জন্য আলাদা করে এনুমারেশন ফর্ম পূরণের দরকার পড়ে না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও এই সুবিধা পাবেন।
এসআইআর নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে তিনি দাবি করেছিলেন, এটি বাস্তবে ‘এনআরসি চালুর কৌশল’। মঙ্গলবার তাঁর নেতৃত্বে রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত ‘মহামিছিল’ করেছে তৃণমূল।
যদিও বিজেপি দাবি করে আসছে, বৈধ কোনও ভোটারের নাম বাদ যাবে না। তাদের অভিযোগ, তৃণমূল অযথা আতঙ্ক তৈরি করছে। কমিশনও বলছে, মৃত ও অনুপ্রবেশকারীদের নাম বাদ দেওয়াই লক্ষ্য, সাধারণ ভোটারের নয়।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার ভবানীপুরের ৩০বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছেছিলেন বিএলও ও বিএলও সুপারভাইজার। মমতার বাড়িতে মোট ৪০টি ফর্ম দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যসংখ্যা অনুযায়ী ফর্মগুলিকে গ্রহণ করেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক জয়দীপ জানা। উপস্থিত ছিলেন মমতার ভাই অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি কমিশনের প্রতিনিধির কাছ থেকে ফর্ম পূরণের নিয়মগুলি বুঝে নেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, ‘বাংলার প্রতিটি মানুষ যতক্ষণ না ফর্ম পূরণ করছেন, ততক্ষণ আমিও করব না।’ যদিও নিয়ম বলছে, তাঁর ক্ষেত্রে ফর্ম জমা না দিলেও কোনও সমস্যা নেই। ভবানীপুর বিধানসভার ৭৭ নম্বর বুথে ভোটার মুখ্যমন্ত্রী। হরিশ পার্কের পাশের মিত্র ইনস্টিটিউশনই তাঁর স্থায়ী ভোটকেন্দ্র।