শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাট অন্যত্র সরানোর ভাবনা রাজ্যের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাট বসবে এবার অন্য জায়গায়। সোনাঝুরি হাটের দূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্য বনদপ্তর ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে। সেই ভর্ৎসনার পরে রাজ্য সরকারের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানান, রাজ্যের তরফে সোনাঝুরি হাটের জন্য বিকল্প জায়গার কথা ভাবা হচ্ছে।
তবে, এখনই হাটের জায়গা পরিবর্তন করা হচ্ছে না। বনদপ্তরের জমিতে হাট বসা নিয়ে একটি মামলার নিস্পত্তি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে রাজ্য সরকার।শুক্রবার বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে সিনার্জি ও বাণিজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সম্মেলনে রাজ্যের তরফে একগুচ্ছ পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নের প্রসঙ্গ উঠে আসে।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা, বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ সিনহা প্রমুখ। সম্মেলনে রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, ‘সোনাঝুরি হাট নিয়ে মামলা চলছে। যদি হাট বন্ধ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আমরা বিকল্প জায়গার চিন্তাভাবনা করছি।’
এছাড়াও তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য বহু সংকল্প নিয়েছেন, কাজও হয়েছে। প্রায় দুই দশক ধরে বন্ধ আহমেদপুরের চিনির কল। এবার তা চালু করে সেখানে নতুন করে বাণিজ্য উদ্যান বা একটি শিল্প পার্ক করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ইলামবাজার, লাভপুরেও ক্ষুদ্র বাজার গড়ার কাজ চলছে ৷ সব ক্ষেত্রেই বিনিয়োগ করা হয়েছে ৷ এর ফলে কারিগররা, শিল্পীরা উপকৃত হবেন। বেশ কয়েকটি হাট খোলা হবে, শিল্পীদের সেই হাটে বসতে দেওয়া হবে ৷’
চন্দ্রনাথ আরও জানান, ইলামবাজারের খাদি দপ্তরের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে ৫ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতে চলতি অর্থবর্ষে ব্যাঙ্ক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা, যার মধ্যে বীরভূমের অংশ ৩ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা। বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের ৪৫ জন কারিগরকে এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ কারিগর আর্থিক সুবিধা প্রকল্পে টুলকিট প্রদান করা হয়েছে।
এদিন রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন পর্ষদের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমের প্রতি নজর দিয়েছেন। চিনির কলটি অনেক দিন বন্ধ হয়েছিল, সেটা আবার চালু করা হচ্ছে। মন্ত্রী ভালো কাজ করছেন।’
উল্লেখ্য, সোনাঝুরি হাটের দূষণ কোনও নতুন সমস্যা নয়। পরিবেশ কর্মীরা বহুবার দূষণ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। জাতীয় পরিবেশ আদালতেও একাধিক মামলা হয় এই সোনাঝুরি নিয়ে। একাধিক মামলা চলার কারণে আইনি চাপ ক্রমশ বেড়েছে। এই আবহেই সোনাঝুরি হাট অন্যত্র সরানোর কথা ভাবছে রাজ্য।