তপন দেব: জেরায় শেষপর্যন্ত ভেঙে পড়ল মা। নিজের দুধের শিশুকেই মেরে সে ফেলে দিয়েছে বাড়ির পাশের জলাশয়ে। চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদুয়ারের দক্ষিণ চেচাখেতায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার হঠাত্ প্রবল চিত্কার করতে শুরু করে শিশুটির মা পূজা ঘোষ। বিছানা থেকে তার শিশু গায়েব। প্রতিবেশীরা এসে দেখেন বিছানায় শিশুর বিছানা থাকলেও শিশুটি নেই। এলাকায় চাউর হয়ে যায় শিশু চুরির খবর। ঘটনার তদন্ত নামে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিস। তদন্তে যান খোদ পুলিসের মহকুমা আধিকারিক শ্রীনিবাস।
এদিন পুলিসের একটি দল কুকুর নিয়ে এসে বিকেল থেকে সন্ধে পর্যন্ত তল্লাশি চালায়। কুকুর বারেবারেই সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠে যাচ্ছিল। এতেই সন্দেহ হয় পুলিসের। রাতে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। শিশুটির মা পুলিসকে জানায়, দুপুরে সে মেয়েকে ঘুমপাড়িয়ে শ্বশুরকে খেতে দিয়েছিল। এরপর সে স্নানে যায়। ফিরে এসে আর বিছানায় শিশুটিকে দেখতে পায়নি। পুলিসের তদন্তে বেশকিছু অসংগতি মেলে।
এদিকে টানা জেরায় শেষপর্যন্তে ভেঙে পড়ে পূজা। স্বীকার করে নেয় যে সে নিজেই নিজের সন্তানকে গলা টিপে খুন করে। তারপর দেহটি পাশের জলাশয়ে ফেলে দেয়। রাতেই পুলিস জলাশয় থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে। তারপরই পূজো ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়। আটক করা হয়েছে পূজার স্বামী জয়দীপ ঘোষকে।
শনিবার শিশুটির ময়নাতদন্ত করা হবে। ঠিক কী কারণে এক দুধের শিশুকে খুন তা এখনও স্পষ্ট নয়। গোটা ঘটনায় হতবাক প্রতিবেশীরা।
এক প্রতিবেশী জানান, আমরা বাকরুদ্ধ। দুপুরে মেয়ে ফোন করল যে জয়দীপ আঙ্কেলের মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। ছুটে গিয়ে দেখলাম পুলিস এসেছে। খোঁজাখুজি শুরু হয়। শেষপর্যন্ত বোঝা গেল মেয়ের মা-ই খুন করেছে। বাড়ির পাশের পুকুরে দেহ পাওয়া গিয়েছে। জেলা পুলিসের তত্পরতা প্রসংশনীয়। জানি না কেন ওরকম হল। ওদের পরিবারের কোনও সমস্যা থাকতে পারে। পুলিসের তদন্ত শেষ হলে বোঝা যাবে ঠিক কী হয়েছিল।