• ‘বন্দে মাতরম’ গানে কাঁচি চালায় কংগ্রেস! কোন অংশ বাদ দেওয়া হয় ও কেন?
    প্রতিদিন | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৭ নভেম্বর, ১৮৭৫। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখলেন ‘বন্দে মাতরম’। তিনি কি আদৌ জানতেন এই গান এবং গানের শুরুর শব্দবন্ধ ‘বন্দে মাতরম’ হয়ে উঠবে বিপ্লবীদের এক অমোঘ মন্ত্র! সেই গানের এবার সার্ধ শতবর্ষ। এখনও যে গানটির প্রাসঙ্গিকতা বিন্দুমাত্র কমেনি তা বোঝা যাচ্ছে। বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে এখন বঙ্কিমগীতি। কেন? বিজেপির অভিযোগ, ওই কবিতা বা গানের কিছু লাইন বাদ দিয়েছিল কংগ্রেস, যা আসলে জাতীয় ঐক্যের পরিপন্থী। আর তা নিয়েই চলছে বাদানুবাদ।

    কিন্তু বিতর্ক কী নিয়ে? কোন অংশ বাদ দিয়েছিল হাত শিবির? আসলে ১৯৩৭ সালে কংগ্রেস দলের একটি অধিবেশনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গানটির স্রেফ প্রথম দুটি স্তবকই গাওয়া হবে। এর নেপথ্যে ছিল একটি ভাবনা। অন্য স্তবকগুলিতে হিন্দু দেবীর সরাসরি উল্লেখ থাকায় তা মুসলিম কংগ্রেস প্রতিনিধিদের একাংশের কাছে ‘বর্জনমূলক’ মনে হয়েছিল। জানা যায়, জওহরলাল নেহরু নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে একটি চিঠিতে বিষয়টি জানান। কেবল প্রথম দুটি স্তবকই জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া উচিত বলেও জানান তিনি।

    সম্প্রতি বিজেপি সেই চিঠি প্রকাশ করে নতুন করে নেহরুকে আক্রমণ করেছে। এভাবেই তিনি ‘বিভাজনের বীজ’ বপণ করেছিলেন বলে কটাক্ষ গেরুয়া শিবিরের। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দাবি, কংগ্রেস এভাবেই রাজনৈতিক সুবিধা পেতে জাতীয় ঐক্যের ক্ষতি করেছে। উল্লেখ্য, ফলস্বরূপ, ১৯৩৭ সালের ২৬ থেকে ২৮ ডিসেম্বর ফৈজপুরে হওয়া কংগ্রেসের অধিবেশনে দুর্গা, লক্ষ্মী এবং সরস্বতীর উল্লেখিত স্তবক বাদ দিয়ে ‘বন্দে মাতরম’ গৃহীত হয় জাতীয় সমাবেশে।

    এই বিতর্কে পালটা দিয়েছে কংগ্রেসও। তারা জানিয়েছে, আরএসএস ও বিজেপি কোনওসময়ই ‘বন্দে মাতরম’ গায়নি। পাশাপাশি যে কোনও ব্যক্তিরই ‘বন্দে মাতরম’-এর পাশাপাশি কিংবা তার পরিবর্তে অন্য কোনও গান গাওয়ার স্বাধীনতাও স্বীকার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে সেই ঘটনার প্রায় ৯০ বছর পরে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। আগামী বছর বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিতর্ক আগামিদিনে আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
  • Link to this news (প্রতিদিন)