এই সময়: ২০০৭-এ বছরে ২,৩৬০.৭ মিলিমিটার, ২০১৩-এ ২,৪৪৭.৪ মিলিমিটার এবং ২০২৫-এর ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ২.২২২.৯ মিলিমিটার কলকাতায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সম্পর্কে এমনটাই জানাচ্ছে পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মিটিওরোলজি (আইআইটিএম)। গত ২৫ বছরে তিন বার মাত্র এমন ঘটনা ঘটেছে যখন মহানগর বছরে দু'হাজার মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি পেয়েছে। যে ভাবে বদলে যেতে শুরু করেছে বৃষ্টির প্যাটার্ন, তাতে এমন নজির আগামী দিনে আরও অনেকবারই ঘটবে বলে মনে করছেন আবহবিদরা। তাঁদের মতে, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলেই ভারত-সহ বিভিন্ন দেশে শুধু বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে তা-ই নয়, একই সঙ্গে 'অনিয়মিত হারে' বৃষ্টিও এখন নিয়মিত ঘটনা।
বদলে যাচ্ছে বৃষ্টির প্যাটার্ন। শুধু ভারতে নয়, সারা পৃথিবীতেই। পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে, আবহবিদরা মনে করছেন যে মডেলগুলোর উপরে ভিত্তি করে এখন বিজ্ঞানীরা আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া থেকে শুরু করে আবহাওয়া বিজ্ঞানের অন্য নানা ধরনের কাজ করেন-সেই মডেলের অনেকগুলোই আর কার্যকরী থাকবে না ২০২৪-এর পরে। সুতরাং দ্রুত বদলে যাওয়া বৃষ্টির প্যাটার্নের কথা মাথায় রেখে সামনের ১৩-১৪ বছরের মধ্যেই আবহাওয়ার নতুন মডেল তৈরি করে নিতে হবে।
পুনের আইআইটিএম জানাচ্ছে, ২০২৫-এর শুধুমাত্র জুনেই একদিনে ১১৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত অর্থাৎ 'অতিভারী' বৃষ্টিপাতের ঘটনা দেশে ৫০২ বার ঘটেছে। ১৯৫১-র পর থেকে একমাসে এত বেশি বার এমন ঘটনা ঘটেনি। জুনে এর আগে সবচেয়ে বেশি 'অতিভারী' বৃষ্টির নজির ছিল ২০২৩-এ। সে বছর দেশে ৪৯৪ বার এমন ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু সেই রেকর্ড ভেঙে গেল মাত্র দু'বছরেই।
তবে বিষয়টা যে এখানেই মিটে যাবে, তেমন নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের হার সম্পর্কে নজর রাখার জন্য তৈরি ষষ্ঠ 'কাপলড মডেল ইন্টারকম্প্যারিঞ্জন প্রজেক্ট' (সিএমআইপি-সিক্স) এখনই যে প্রবণতা দেখাতে শুরু করেছে তার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ২০২৭ থেকে ভারতে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে শুরু করবে। আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের অনেকেই মনে করছেন, ২০২৭ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না ইতিমধ্যেই সেই পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে দেশে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ওয়েদার স্টেশনগুলো যে তথ্য পাঠিয়েছে, তার ভিত্তিতে বিজ্ঞানী বলছেন, 'অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে তুমুল বৃষ্টি, পাশাপাশি দু'এলাকার একটিতে কম বৃষ্টি এবং অন্যটিতে অতিরিক্ত বৃষ্টি ইদানীং নিয়মিতই ঘটছে। এর পাশাপাশি রয়েছে মেঘভাঙা বৃষ্টির মতো ঘটনাও।'