• ‘রাজি হননি ইন্দিরা গান্ধী...এখন এত সমস্যা হতো না’, পাক-পরমাণু নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস Ex-CIA অফিসারের
    এই সময় | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
  • সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, একাধিক দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালাচ্ছে। সেই তালিকায় রয়েছে পাকিস্তানও। এই বছরেই পহেলগাম জঙ্গি হামলার পরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি ঘটে। অপারেশন সিঁদুর লঞ্চ করে ভারত। পরে সংঘর্ষ বিরতি হলেও, ট্রাম্পের মন্তব্য ছিল পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে ঘুরে যেতে পারত এই লড়াই। ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগ নিয়ে বার বার ঠারেঠোরে হুমকিও দিয়েছে পাকিস্তান। এই আবহে এ বার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সিআইএ-র প্রাক্তন অফিসার রিচার্ড বার্লো। আটের দশকে ভারত সরকারের একটি সিদ্ধান্তের ফলে এখন পাকিস্তান এমন হুমকি দিতে পারছে বলে তাঁর মত। সেই সময়ে ভারত সেই বিশেষ সিদ্ধান্ত না নিলে, বর্তমানে অনেক সমস্যা হতোই না বলে তাঁর মত।

    মার্কিন গুপ্তচর সংস্থার প্রাক্তন অফিসার রিচার্ড বার্লোর দাবি, আটের দশকে পাকিস্তানের কাহুতা পারমাণবিক কেন্দ্রের উপর (Kahuta Nuclear Facility) যৌথভাবে গোপন হামলা (Covert Operation) করার কথা হয়েছিল ভারত ও ইজ়রায়েলের। সেটা করলে পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হতে পারত না। রিচার্ডের দাবি, শেষ মুহূর্তে ওই অপারেশনে সম্মতি দেয়নি ভারত। ওই সিদ্ধান্তকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যাও দিয়েছেন রিচার্ড।

    ANI-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক দাবি করেছেন সিআইএ-এর প্রাক্তন অফিসার। তিনি জানিয়েছেন, আটের দশকে যখন পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হয়ে ওঠার চেষ্টা করছিল, তখন তিনি আমেরিকার ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, একটি বিশেষ সূত্র থেকেই তিনি কোভার্ট অপারেশনের বিষয়ে খোঁজ পেয়েছিলেন। কিন্তু ওই পরিকল্পনায় তিনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন না।

    এএনআই-কে তিনি বলেছেন, ‘আমি ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত সরকারি কাজে বাইরে ছিলাম। সেই সময়েই গোটা বিষয়টি পরিকল্পনা হয় এবং বাতিলও হয়ে যায়।’ ভারত এই পরিকল্পনায় সিলমোহর না দেওয়ার জন্য ইন্দিরা গান্ধীকেই দায়ী করেছেন রিচার্ড। সেই সময়ে ভারতে প্রধানমন্ত্রীর পদে ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। তাঁর কটাক্ষ, ‘ইন্দিরা গান্ধী বিষয়টি অনুমোদন করেননি, এটা লজ্জাজনক। ওটা হলে অনেক সমস্যা মিটে যেত।’

    বেশ কিছু রিপোর্ট এবং ডিক্ল্যাসিফাইড ডকুমেন্টের ভিত্তিতে জানা যায়, ভারত ও ইজ়রায়েল যৌথভাবে কাহুতা ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট প্লান্টে বিমানহানার পরিকল্পনা করেছিল। পাকিস্তানের পারমাণবিক কার্যকলাপের মেরুদণ্ড গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ইজ়রায়েলের অন্যতম শত্রু ইরান যাতে পাকিস্তানের মাধ্যমে পারমাণবিক অস্ত্র সংক্রান্ত কোনও সুবিধা না পায়, সেই কারণে এই বিষয়টিতে আগ্রহ দেখিয়েছিল ইজ়রায়েল।

    সেই সময়ে আমেরিকাও এই হামলার পক্ষে ছিল না বলে দাবি রিচার্ডের। ওই সময়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন রোনাল্ড রেগন। ইজ়রায়েল এই হামলা চালালে সেই সময়ে আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে সমস্যা হতো আমেরিকার। এই ভাবনা থেকেই ইজ়রায়েলের এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন তৎকালীন আমেরিকার প্রশাসন।

    বার্লোর মতে, এই নির্ভরতার ফায়দা তুলেছিল পাকিস্তান। তাদের নিউক্লিয়ার ফেসিলিটির উপর আঘাত এলে এবং পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য করা কমিয়ে দিলে, আফগানিস্তানে আমেরিকার স্বার্থ আর দেখবে না তারা, এমনটাই নাকি হুমকি দিয়েছিলেন পাকিস্তানের অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান মুনির আহমেদ খান।

    কাহুতা এনরিচমেন্ট ফেসিলিটি থেকে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কার্যকলাপ শুরু হয়। আটের দশক পেরিয়ে, নয়ের দশকের শেষে ১৯৯৮ সালে প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করে পাকিস্তান।

  • Link to this news (এই সময়)