শুক্রবার ৭ নভেম্বর শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালের ক্যানসার বিভাগের নতুন ইউনিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হল। ক্যানসার জয়ীদের হাতেই উদ্বোধন করা হল নতুন ইউনিটটির। এদিনের অনুষ্ঠানে ২২ জন ক্যানসার জয়ীকে সম্মান জানানো হয়। সকলেই বিভিন্ন সময়ে শ্রমজীবী হাসপাতালে চিকিৎসা পেয়েছেন ও বর্তমানে সুস্থ আছেন। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মানপত্র, ফুল ও মিষ্টি।
অনুষ্ঠানের সূচনায় শ্রমজীবী হাসপাতালের সম্পাদক চিকিৎসক অনিল সাহা বলেন, “আমাদের হাসপাতালে ক্যানসারের চিকিৎসা দীর্ঘদিন ধরেই হচ্ছে। ১৯৯৭-৯৮ সাল থেকেই আমরা ক্যানসার চিকিৎসা, অপারেশন, আর্লি ক্যানসার ডিটেকশন ক্যাম্প করে আসছি। বহু জটিল ক্যানসার রোগীর চিকিৎসা আমরা করেছি। তবে এই প্রথম একটি আলাদা কক্ষে ওয়ার্ড চালু করা হল।”
হাসপাতালের সহসম্পাদক শিল্পী ঘোষ বলেন, “শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালে ২০১২ সাল থেকেই ক্যানসার চিকিৎসা শুরু হয়। প্রথম শুরু করেন স্বনামধন্য চিকিৎসক স্থবির দাশগুপ্ত। রোগী দেখতে আসতেন সুবীর গাঙ্গুলি, প্রদীপ মাইতি, অনুপ মজুমদার। সেই ধারাবাহিকতায় আজ একটি নতুন ওয়ার্ড উদ্বোধন করা হল, আমরা আনন্দিত।”
ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শ্যামসুন্দর অধিকারী বলেন, “সামগ্রিক ভাবে এই হাসপাতাল ক্যানসার চিকিৎসার সহায়ক হয়ে উঠেছে। এখানে সিটি স্ক্যান মেশিন, ব্লাড ব্যাঙ্ক ক্যানসার চিকিৎসার বিশেষ সহায়ক। আশা করছি অদূর ভবিষ্যতে এখানে রেডিয়েশন থেরাপিও করা যাবে।”
জনাইয়ের বাসিন্দা মনসুরা বেগম বলেন, “এখনও চিকিৎসা চললেও বর্তমানে ভাল আছি। এই হাসপাতালের চিকিৎসায় আমি সুস্থ হয়ে উঠছি।” চু্ঁচুড়ার বাসিন্দা নাট্যকর্মী মুক্তেশ দত্ত বলেন, “২০১৫ সালে আমি ডাক্তার অনিল সাহার কাছে প্রথম আসি। ডাক্তারবাবু চিকিৎসার পাশাপাশি আমার মনোবলও বাড়িয়ে দেন। আমার অপারেশন, চিকিৎসা চলে, আমি এখন দেশজুড়ে নাটক করে বেড়াতে পাড়ি। ধন্যবাদ শ্রমজীবী হাসপাতালকে।”
সন্ধ্যা দাস বলেন, “প্রথমে কিছু বুঝিনি, পরে অসুস্থতা বেড়ে গেলে ২০১৬ সালে ডাক্তার অনিল সাহার কাছে যাই। উনি সার্জেনের কাছে পাঠান আমরা ব্রেস্ট ক্যানসারের অপারেশন হয়। হাসপাতালের সবাই পাশে ছিলেন।”
ছাটিয়া দেবীর চিকিৎসা হয় বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালে। দু’দফায় অস্ত্রোপচার হয়। এখন ভাল আছেন। চন্দনা দাস, আজমিরা বেগম, ভারতী দাস, শিবানী সিংহরা সকলে মিলিতভাবে ক্যানসার ওয়ার্ড উদ্বোধন করে আপ্লুত। অনুষ্ঠানে ক্যানসারজয়ী কোন্নগরের বাসিন্দা মিতা ভট্টাচার্য গান শোনান। গান শোনান শ্রমজীবী হাসপাতালের সদস্য প্রেরণা ঘোষ, লাবণী সরকার, রিম্পা বারুই। এদিনের অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সোনালী ব্যানার্জি।