• স্কুল সার্ভিস কমিশনের ফলাফল দেখার জন্য নতুন ওয়েবসাইট
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
  • শুক্রবার রাতে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ করে। যদিও ফল ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট সাইটটি ক্র্যাশ করে যায়। শনিবার সকালেও রাজ্যের বহু পরীক্ষার্থী তাঁদের ফল দেখতে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। এরপরই নড়েচড়ে বসে কমিশন। চাকরিপ্রার্থীদের সুবিধার্থে ফলাফল দেখার জন্য তড়িঘড়ি নতুন ওয়েবসাইট চালু করে তারা।

    শনিবার স্কুল সার্ভিস কমিশন স্বীকার করে নেয়, অতিরিক্ত চাপের কারণে ওয়েবসাইটে সমস্যা হচ্ছে।  সেই সমস্যা মেটাতে নতুন ওয়েবসাইট খোলার কথা ঘোষণা করে তারা। সেই সাইটটি হল wbsschelp wbsschelpdesk.com। এবার পরীক্ষা গ্রহণের ৫৪ দিনের মাথায় ফলপ্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। পাশাপাশি ‘আনসার কি’-ও প্রকাশ করা হয়েছে।

    সূত্রের খবর, এক দিকে শিক্ষাকর্মীদের আবেদন জমা পড়ছে। অন্য দিকে, হাজার হাজার পরীক্ষার্থী ফল দেখার জন্য ওয়েবসাইটে ঢোকার চেষ্টা করছেন। তার ফলেই এই পরিস্থিতি। শনিবার এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট ছাড়াও হেল্পডেস্ক হিসাবে একটি ওয়েবসাইট প্রকাশ করেছি। এ ছাড়াও আরও একটি ওয়েবসাইট রয়েছে। সেখান থেকে দেখা যাবে।’

    স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রে খবর, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে মোট ১২ হাজার ৫১৪ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। এর জন্য পরীক্ষায় বসেন দু’লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী। ওএমআর শিটে মোট ৬০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। আপাতত ওয়েবসাইটে ঢুকে পরীক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর দেখতে পাবেন। পরবর্তীতে আলাদা করে কমিশন ইন্টারভিউয়ের তালিকা তৈরি করবে।

    এসএসসির সূত্রে খবর, এসএসসির প্রধান কার্যালয়ে চাকরিপ্রার্থীদের নথি যাচাই করা হবে। তবে ইন্টারভিউ নেওয়া হবে এসএসসির আঞ্চলিক অফিসগুলিতে। ইন্টারভিউ পর্ব শেষ হওয়ার পর সুপারিশপত্র পাঠানো হবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেয় এসএসসি।

    এদিকে এরই মধ্যে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে আইনি জটিলতা দেখা দিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক চাকরিপ্রার্থী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেওয়া ১০ নম্বর কতটা যুক্তিসঙ্গত?’ মামলাকারীদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। সেই বছর যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের কেন এই অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হবে?

    কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা শুনানিতে জানিয়েছেন, এই মামলার ফলাফলের ওপর নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের লিখিত পরীক্ষার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। আগামী বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে।

    প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের এসএসসির প্যানেলভুক্ত ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়। দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, নতুন করে নিয়োগের পরীক্ষা নিতে হবে। সেই পরীক্ষায় ২০১৬ সালের যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা বসতে পারবেন। নতুন চাকরিপ্রার্থীদেরও পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেয় এসএসসি। ৭ সেপ্টেম্বর এবং ১৪ সেপ্টেম্বর যথাক্রমে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন।

    এসএসসি সূত্রে খবর, ৭ সেপ্টেম্বরের নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৯৬১জন। এর মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ১৫২ জন অর্থাৎ ৯১.৬২ শতাংশ। পাশাপাশি ১৪ সেপ্টেম্বরের একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৫৪৩ জন। এর মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন ২ লক্ষ ২৯ হাজার ৪৯৭ জন অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)