এসআইআর আতঙ্কে বিশেষ কমিটি গঠন অভিষেকের, মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ভোটার তালিকা পরিমার্জনের জন্য শুরু হয়েছে বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর। ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে এই প্রক্রিয়া। তার পর থেকেই রাজ্যের একাধিক জায়গা থেকে আসছে মৃত্যুর খবর। ২০০২ সালের ভোটার তালিকাকে পশ্চিমবঙ্গে সূচক হিসেবে ধরেছে নির্বাচন কমিশন।
সেই তালিকায় যাঁদের নাম নেই, তাঁদের মধ্যেই আতঙ্ক ক্রমশ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি মাঠে নেমে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে গঠিত হয়েছে বিশেষ সহয়তা টিম। এই দল শনিবার, অর্থাৎ আজ থেকেই কাজ শুরু করবে বলে খবর। এসআইআর আতঙ্কে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এবং তাঁদের প্রয়োজনীয় সাহায্য দেওয়াই মূলত লক্ষ্য।
এসআইআরের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই পথে নেমে মিছিল করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সাধারণ মানুষের পাশে থাকার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে এসআইআরের ফলে একজনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে দিল্লি গিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক। বিশেষ কমিটি গঠনের পাশাপাশি আর্থিক সাহায্যেরও বন্দোবস্ত করা হবে বলে সূত্রের খবর।
আজ থেকেই বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করবেন এই কমিটির সদস্যরা। শনিবার মোট পাঁচটি স্বজনহারা পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন তৃণমূলের নেতানেত্রীরা। অভিষেকের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, ‘এসআইআর নিয়ে যেভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে, তাতে বহু নিরপরাধ মানুষ চরম মানসিক চাপে রয়েছেন। তৃণমূল সেই পরিবারের পাশে আছে এবং থাকবে।‘ প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের জেরে জনজীবনে যে ভয় এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, তা মোকাবিল করতে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সাধারণ মানুষকে একা না ছাড়ার বার্তা দিতে চাইছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মত রাজনৈতিক মহলের।
শনিবার মোট পাঁচটি স্বজনহারা পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন তৃণমূল নেতানেত্রীরা। গত ২৮ অক্টোবর, আগরপাড়ায় ‘এনআরসি আতঙ্ক’-এর কথা জানিয়ে আত্মহত্যা করেন প্রদীপ কর নামে এক প্রৌঢ়। এদিন তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন সামিরুল ইসলাম এবং পার্থ ভৌমিক। টিটাগড়ে মৃত কাকলি সরকারের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন শশী পাঁজা এবং তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য।
গত ৩ নভেম্বর ডানকুনি পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুলপল্লির বাসিন্দা হাসিনা বেগমের মৃত্যু হয়। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় আতঙ্কে ভুগছিলেন বছর ষাটের ওই মহিলা। তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং সুদীপ রাহার।
এসআইআর ‘আতঙ্কে’ হুগলির শেওড়াফুলিতে মৃত মহিলার পরিবারের সঙ্গে এদিন দেখা করবেন জয়া দত্ত-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এছাড়া উলুবেড়িয়ার খলিসানির বাসিন্দা তিরিশের যুবক নিহত জাহির মালের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করতে যাবে তৃণমূল প্রতিনিধি দল। অরূপ চক্রবর্তী-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব স্বজনহারাদের সঙ্গে দেখা করবেন।