• অধীরের ভূয়সী প্রশংসায় শুভেন্দু, ছাব্বিশের আগে ‘হাত’ ছেড়ে পদ্মবনে কংগ্রেস নেতা!
    প্রতিদিন | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করে শাসক-বিরোধী উভয়েই কোমর বেঁধে প্রস্তুতি পর্ব শুরু করেছে। তারই মাঝে বাংলার রাজনৈতিক মানচিত্রে নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত? শনিবার সকালে অধীররঞ্জন চৌধুরীকে ‘শক্তিশালী’ নেতা বলে প্রশংসা করে কি সেই ইঙ্গিতই দিলেন শুভেন্দু? হাতশিবিরে প্রায় ‘অকেজো’ হয়ে যাওয়া নেতা কি আত্মপ্রকাশ করবেন পদ্মবনে? স্বাভাবিকভাবে চলছে জোর চর্চা।

    এদিন সকালে সাংবাদিক বৈঠক করেন শুভেন্দু অধিকারী। SIR ইস্যুতে তৃণমূলকে একাধিকবার নিশানা করেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকের শেষের দিকে ওঠে কংগ্রেসের প্রসঙ্গ। বিজেপি নেতা শুভেন্দু কংগ্রেসকে তুলোধোনা করলেও, অধীরের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বলেন, “কংগ্রেস তো ঘোষিত মমতার বন্ধু। আর যেদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অধীরকে সরালেন, সেদিন রাহুল, সোনিয়া, মল্লিকার্জুন খাড়গে সিগনাল দিয়েছেন মমতার সঙ্গে লড়ব না। মমতার সঙ্গে লড়লে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, সোমেন মিত্র, গনিখান চৌধুরী, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পর শক্তিশালী নেতা হলেন অধীর। যদি সত্যি মমতার বিরুদ্ধে লড়তেন তবে অধীরকে সরাতেন না।” শুভেন্দুর এই মন্তব্য নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই নানা মহলে চলছে জোর চর্চা।

    বলে রাখা ভালো, দীর্ঘদিন বঙ্গ কংগ্রেসের ভার সামলেছেন পুরোপুরি তৃণমূল বিরোধী অধীররঞ্জন চৌধুরী। ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক তৃণমূলের অন্যতম বিরোধী মুখ হিসেবে উঠে এসেছিলেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে বাংলা তো বটেই, কেন্দ্রেও তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের টানাপোড়েন প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে জাতীয় রাজনীতিতে মমতার গুরুত্ব ভালোই বোঝেন রাহুল-সোনিয়ারা। তাই বঙ্গে অধীরের ভূমিকায় মোটেও সন্তুষ্ট ছিল না দিল্লি। সেই পরিস্থিতি অধীরকে সরিয়ে ‘নরমপন্থী’ শুভঙ্কর সরকারের হাতে প্রদেশ কংগ্রেসের ব্যাটন তুলে দেওয়া হয়। ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, শুভঙ্কর সরকারের সঙ্গে অধীরের তেমন সুসম্পর্ক নেই। তাই বর্তমানে প্রায় অন্তরালে অধীর। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দুর প্রশংসা যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অবশ্য রাজনৈতিক মহলের সমীকরণের জল্পনায় সিলমোহর পড়ে কিনা, তার উত্তর দেবে সময়। যদিও অধীরের তরফে এই প্রসঙ্গে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। 

    প্রসঙ্গত, এসআইআর নিয়ে যে যথেষ্ট চাপে বিজেপি, তাও যেন শুভেন্দুর কথায় স্পষ্ট। কারণ, রাজনৈতিক মহলের মতে এসআইআরের ফলে বহু মতুয়া, রাজবংশী বিপাকে পড়তে পারেন। তার ফলে তাঁদের মধ্যে অসন্তোষ ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। আর তার প্রভাব বিজেপির ভোটবাক্সে পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ বাধ্য হয়ে শুভেন্দু বারবার দাবি করেন, এসআইআরের মাধ্যমে কারও নাম বাদ গেলে পরবর্তীকালে সিএএ করে তাঁকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। আর বর্তমানে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে যাঁরা রানাঘাট, রায়গঞ্জের সংশোধনাগারে রয়েছেন, তাঁদেরও মুক্তির বন্দোবস্ত করা হবে বলেও আশ্বাস দেন বিরোধী দলনেতা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)