স্কুলের প্রার্থনায় রাজ্য সঙ্গীত গাওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে না দার্জিলিঙের পাহাড়ে! কেন, ব্যাখ্যাও দিল জিটিএ
আনন্দবাজার | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
পাহাড়ের স্কুলগুলিতে প্রভাতী প্রার্থনায় ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ না গাইলেও চলবে। এক বিজ্ঞপ্তিতে তা স্পষ্ট করে দিয়েছে দার্জিলিঙের পার্বত্য অঞ্চলের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা ‘গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)। সেখানে স্কুলগুলিতে জাতীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি নেপালি ভাষায় প্রভাতী প্রার্থনার চল রয়েছে। এই প্রচলিত প্রথায় কোনও পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়েছে জিটিএ।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্কুলগুলির প্রভাতী প্রার্থনা সঙ্গীতের বিষয়ে নয়া সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে প্রভাতী প্রার্থনায় গাইতে হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটি। বস্তুত, এই গানটিই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সঙ্গীত। পর্ষদের ওই বিজ্ঞপ্তির পরে শুক্রবার জিটিএ সচিব পিডি প্রধান একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানান, জিটিএ-র এক্তিয়ারভুক্ত পার্বত্য এলাকার স্কুলগুলিতে আগে যেমন প্রার্থনা সঙ্গীত চলত, এখনও তেমনই চলবে।
জেলা স্কুল পরিদর্শককে পাঠানো ওই চিঠিতে জিটিএ সচিব জানান, জিটিএ এলাকার অনেক স্কুলে জাতীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি নেপালি ভাষায় প্রভাতীয় সঙ্গীতের প্রচলন রয়েছে। সংবাদসংস্থা পিটিআই অনুসারে ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘জিটিএ এলাকার স্কুলগুলিতে ভিন্ন সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং ভাষার কথা মাথায় রেখে ওই স্কুলগুলিতে প্রার্থনা সঙ্গীতে প্রচলিত ঐতিহ্যই অনুসরণ করা হবে।’ এই বিষয়টি জিটিএ-র এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার মাধ্যমিক স্তরের সব স্কুলকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শককে অনুরোধ করেছেন জিটিএ সচিব।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক আধিকারিকও পিটিআইকে জানিয়েছেন, প্রভাতী সঙ্গীতের ক্ষেত্রে জিটিএ এলাকার স্কুলগুলিকে এই ছাড় দেওয়া হয়েছে। সেখানে রাজ্য সঙ্গীত গাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়নি বলেই দাবি ওই আধিকারিকের।
কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনিত থাপা। নেপালি ভাষায় এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, দার্জিলিঙের পাহাড়ের নিজস্ব বৈশিষ্ট রয়েছে। সেখানের ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য রয়েছে। তাঁর বক্তব্য, দার্জিলিং পাহাড়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই ‘বাংলার মাটি, বাংলার গান’ গাওয়া বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত পাহাড়ের স্কুলগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলে জানান জিটিএ প্রধান। তিনি জানান, দার্জিলিঙের পার্বত্য এলাকার স্কুলগুলিতে এত দিন ধরে যে ঐতিহ্য চলে আসছে, তা-ই চলবে।