• মাত্র ১৫ দিনের জন্য শীতকালীন অধিবেশন কেন, প্রশ্ন বিরোধীদের, অন্তর্বর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি সরকারের?
    বর্তমান | ০৯ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মোদি সরকার কি অন্তর্বর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে? প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। শনিবার এই জল্পনা আচমকা উসকে দেওয়ার পিছনে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারেরই একটি বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত। সরকার এদিন ঘোষণা করেছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের সময়সীমা। এবার ১ ডিসেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত  চলবে শীতকালীন অধিবেশন। অর্থাৎ বছরের সর্বশেষ সংসদীয় অধিবেশন মাত্র ১৫ দিনের জন্য ডাকা হচ্ছে। কারণ এই সময়সীমায় দু’বার শনি ও রবিবার আছে। অতএব কাজের দিন মাত্র ১৫। এত কম সময়ের জন্য সংসদের সময়সীমা সাম্প্রতিককালে মধ্যে দেখা যায়নি। মোদি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছে বহু বিল বকেয়া হয়ে রয়েছে যেগুলি পাশ করাতে হবে। অথচ সেই বিল পাশের জন্য এই ১৫ দিন যথেষ্ট নয়। বিগত বাদল অধিবেশন বিরোধীদের বিক্ষোভে একপ্রকার অচলই থাকে দিনের পর দিন। তাই শীতকালীন অধিবেশন গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা। সাধারণত যদি কোনও বিধানসভা কিংবা লোকসভা ভোটের সূচি আসন্ন হয়, তাহলেই সংসদের অধিবেশনের সময়সীমা কমিয়ে দেওয়া হয়। কারণ এমপি, মন্ত্রীরা ব্যস্ত থাকেন প্রচারে। কিন্তু বিহারের ভোট প্রক্রিয়া ১৪ নভেম্বরের মধ্যেই সমাপ্ত হয়ে যাবে। তারপর আগামী বছরের এপ্রিল মাসের আগে কোনও নির্ধারিত নির্বাচন নেই। তাহলে কেন শীতকালীন অধিবেশন এরকম স্বল্প সময়ের জন্য? কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক, রাজ্যসভার সদস্য জয়রাম রমেশ প্রশ্ন তুলছেন, সরকার কি অন্তর্বর্তী নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে? নাকি সংসদের  গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে? সরকার কেন সংসদের মুখোমুখি হতে ভয় পায় প্রত্যেকবার? প্রধানমন্ত্রী কার্যত সংসদে নিজের ভাষণ না থাকলে আসেনই না। অন্যদিকে, তৃণমূল সংসদীয় দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়ানের বক্তব্য, মোদি সরকার এসআইআর নিয়ে আলোচনা ও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে ভয় পাচ্ছে। সম্মিলিত বিরোধীরা উত্থাপন করবে এসআইআর এবং নির্বাচন কমিশনের বহুবিধ অনিয়মের প্রসঙ্গ। যার উত্তর নেই সরকারের কাছে।

    কংগ্রেসের বক্তব্য, বিহারের ফলাফল কী হবে সেটা আগাম আন্দাজ করছে বিজেপি ও মোদি সরকার। সংসদীয় মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে যে, সরকার বিহারের নির্বাচনের পর কিছু একটা রাজনৈতিক আলোড়নের আভাস পাচ্ছে। তাই  আগে থেকেই অন্তর্বর্তী নির্বাচনের জন্য  তৈরি হচ্ছে সরকার। জয়রাম রমেশ বলেছেন, এই প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়া উচিত সরকারের। কারণ ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

    কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সংসদীয় বিষয়ক কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, কবে কতদিনের জন্য সংসদের অধিবেশন ডাকা হবে। সবথেকে বেশিদিন ধরে চলে বাজেট অধিবেশন। বছরের সূত্রপাতেই জানুয়ারি মাসে এই অধিবেশন শুরু হয়ে এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলে। মাঝখানে কিছুদিনের বিরতি থাকে। পরবর্তী বর্ষাকালীন অধিবেশন চলে জুলাই থেকে আগস্ট। অন্তত তিন সপ্তাহের জন্য। শীতকালীন অধিবেশনও তিন থেকে চার সপ্তাহ ধরে চলে। সংবিধানের ৮৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী সংসদের অধিবেশন ডাকার অধিকার সরকারের। রাজনৈতিক মহলে শনিবার রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে যে, কেন মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই মোদি সরকার সমাপ্ত করে দিতে চাইছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন? প্রকৃত কারণ কী?
  • Link to this news (বর্তমান)