ঘরে ঘুমের ওষুধ স্প্রে করে গার্ডেনরিচে টাকা-গয়না লুট
বর্তমান | ০৯ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়ির সবাই গল্পগুজব করেছিলেন। তারপর শুতে চলে যান। ঘড়ির কাঁটা যখন একটা ছুঁইছুঁই আচমকা দরজার বাইরে কিছু একটি স্প্রে করার শব্দ পান বৃদ্ধা। তারপর আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি। ঘণ্টাদেড়েক বাদে যখন তাঁর ঘুম ভাঙে তখন ঘর তছনছ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে জিনিসপত্র। দরজা ভাঙা। আলমারিও ভাঙা। ভিতর থেকে উধাও টাকা ও গয়না। চিৎকার শুরু করেন তিনি।
শুক্রবার গভীর রাতে এই লুটের ঘটনাটি ঘটেছে গার্ডেনরিচে। পরিবারটির দাবি, বাড়ির একতলায় থাকেন ওই বৃদ্ধা। ঘরে স্প্রে ছড়িয়ে তাঁকে অচেতন করে দুষ্কৃতীরা। তারপর অপারেশন চালায়। প্রায় ৮০ হাজার টাকা নগদ ও ২০ গ্রাম ওজনের সোনার অলংকার খোয়া গিয়েছে। এরপর শনিবার সকালে মেটিয়াবুরুজ থানায় অভিযোগ করেন ওই বাড়ির গৃহকর্তা কৌশিক চট্টোপাধ্যায়। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। লালবাজার জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের আশপাশে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। পাড়ার মোড়ের দিকে কয়েকটি দোকানে রয়েছে। সেগুলির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় এদিন রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি।
লালবাজার জানিয়েছে, গার্ডেনরিচের পাহাড়পুর রোডের বাড়িটিতে থাকেন কৌশিক চট্টোপাধ্যায়, তাঁর মা আরতিদেবী, স্ত্রী ও জেঠিমা। মা ও স্ত্রী থাকেন দোতলায়। নীচের তলায় একাই থাকেন জেঠিমা অশোকা চট্টোপাধ্যায়। সেই ঘরেই হামলা হয়। কৌশিকের দাবি, ‘রাত ১২টা পর্যন্ত একতলার ঘরে বসেই চারজন গল্পগুজব করেছিলাম। তখনও কিছুই হয়নি। আমি, আমার স্ত্রী ও মা উপরে ওঠার কিছুক্ষণ পর আসে দুষ্কৃতীরা। মধ্যরাতে চিৎকার করতে থাকেন জেঠিমা। আমরা ভাবি যে, হয়তো শরীর খারাপ করছে। কিন্তু নীচে এসে দেখি ঘর লণ্ডভণ্ড। টাকা আর গয়না নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।’ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, ঘরের বাইরে থেকে ঘুমের ওষুধ স্প্রে করা হয়েছে। তার ফলে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন বৃদ্ধা। তারপর বাইরের দিকের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। ঘরের মেঝে থেকে মোম পাওয়া গিয়েছে। ঘরে আলো জ্বালালে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মোমবাতি জ্বালিয়ে লুটপাট চালানো হয়েছে। অভিযোগকারীরা জানান, আগেরদিন ভিতর মোমবাতি ব্যবহার করেননি তাঁরা।