• নিউটাউন স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনে চাঞ্চল্যকর তথ্য! খুনের পর বিডিও প্রশান্ত বর্মনের নীলবাতি লাগানো সরকারি গাড়িতেই রহস্য...
    ২৪ ঘন্টা | ০৯ নভেম্বর ২০২৫
  • নান্টু হাজরা: নিউটাউনের স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের (New Town Murder) ঘটনায় উঠে এল একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, খুনের দিন (Kolkata Crime) ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল মোট ছয়জন। এর মধ্যে দুই অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই জেরায় স্বীকার করেছে, তারা ঘটনাস্থলে ছিল। গ্রেফতার (Driver Arrest) হওয়া গাড়িচালক দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দা, বাকি পাঁচজনের বাড়ি উত্তরবঙ্গে, জানিয়েছে পুলিশ (Bidhannagar Police)। স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনে এমনই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দুই অভিযুক্তর পুলিসের জিজ্ঞাসাবাদে। 

    অভিযুক্তদের জেরা করে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন ২৮ তারিখ ছয় জন মিলেই মারধর করেছিল স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে প্রথমে বিডিও প্রশান্ত বর্মন নিজে বেল্ট,চড়, লাথি,ঘুষি মারছিল। প্রত্যেকে মিলেই বেধরক মারধর করে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে। খুনের উদ্দেশ্য ছিল না, উদ্দেশ্য ছিল মারধর করা এবং চুরি যাওয়া জিনিস উদ্ধার করার। জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি দুই অভিযুক্তের এমনটাই পুলিস সূত্রে খবর। যখন মারধর করা হচ্ছিল সেই সময় স্বর্ণ ব্যবসায়ী হঠাৎ মাথার পেছনে আঘাত লাগতেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তিনি। সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে, চোখ দিয়ে রক্ত বেরোনোর মতো পরিস্থিতি হয়, কিছুক্ষনের মধ্যে বুঝতে পারে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এরপর তাঁর নিথর দেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হয় একটি নীলবাতি লাগানো গাড়িতে।  গোটা ঘটনা বিডিও নির্দেশে হয়েছিল। প্রত্যেককে বিডিও জানিয়েছিল কিছু হবে না যা হবে তিনি বুঝে নেবেন। পুলিস সূত্রের খবর, দেহটি ফেলা হয় নিউটাউনের যাত্রাগাছি এলাকার এক খালের ধারে।

    প্রসঙ্গত, দিন আটেক আগে যাত্রাগাছির খালপাড় থেকে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার হয়। তারপর থেকেই সন্দেহের তির গিয়েছিল সরকারি গাড়ির দিকেই। পুলিসের হাতে এসেছে যাত্রাগাছির সিসি ক্যামেরার ফুটেজও। তাতে দেখা গিয়েছে— নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাট থেকে দ্রুত গতিতে একটি গাড়ি বেরিয়ে নতুন ব্রিজ পার হয়ে যাত্রাগাছির খালের দিকে যাচ্ছে। স্পষ্ট দেখা গিয়েছে গাড়িটির নীলবাতি। যা প্রশাসনিক গাড়ি বলেই মনে করছে পুলিস। তদন্তে উঠে এসেছে, সেটি বিডিও প্রশান্ত বর্মনের অফিসিয়াল গাড়ি।  সেই গাড়িই ব্যবহার করা হয়েছিল খুন ও দেহ লোপাটে। ফলে তদন্তের জালে এখন জড়াচ্ছে বিডিওর নামও।

    ২৯ তারিখ সন্ধ্যার বিমান ধরার জন্য নিজের গাড়ি বাদ দিয়ে অ্যাপ ক্যাব করে বিমানবন্দরে পৌঁছয়,বিমানবন্দরে বিডিওর সঙ্গে একই বিমানে বাগডোগরায় পৌঁছয় তুফান থাপা- এক অভিযুক্ত।

    জিজ্ঞাসাবাদে পুলিস এমনটাই জানতে পেরেছে। তবে তারা সত্যি বলছে কিনা, সেই কারণে অভিযুক্ত দুজনকে কখনো আলাদা আবার কখন সামনাসামনি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

    এই ঘটনার পর গাড়িচালক রাজু ঢালী ও তাঁর এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। বিডিও প্রশান্ত বর্মনের গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয় থানায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিজেপি কর্মীরা। তবে বিডিও প্রশান্ত বর্মনের দাবি, 'এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। কলকাতায় আমার কোনও বাড়ি নেই, কোনও সোনা চুরি যায়নি।'

    এলাকায় 'দাবাং বিডিও' নামে পরিচিত জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মন গতকালই সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন,'আমার কোনও সোনা চুরি হয়নি। আমার কোনও বাড়ি নেই। আমি ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকেও চিনি না। চোরকেও চিনি না। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করে দেখা হোক। আমার যে তিনটি বাড়ির কথা বলা হচ্ছে, কাগজপত্র দিয়ে তা দেখানো হোক।'

    তদন্তকারীরা এখন খতিয়ে দেখছেন, খুনের মোটিভ কী এবং সরকারি গাড়িটি কী ভাবে ব্যবহার করা হল। পুলিসের হাতে থাকা সিসিটিভি ফুটেজই এখন এই রহস্যময় খুনের তদন্তে মূল প্রমাণ হতে পারে।

     

     

     

     

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)