রাজারহাট-খড়িবাড়ির ভাঙা রাস্তায় লুকিয়ে বিপদ, মানতে চায় না পূর্ত দফতর
আনন্দবাজার | ০৯ নভেম্বর ২০২৫
রাস্তা ভেঙে বেরিয়ে পড়েছে পাথরকুচি। রাস্তার একাধিক জায়গায় রয়েছে গর্ত। একইসঙ্গে রাস্তা জুড়ে ফেলা রাখা বালি। রাজারহাট-খড়িবাড়ি রোডে মজা খালের উপরে রাস্তার দশা এমনই। শুক্রবার ওই রাস্তাতেই বাস উল্টে খালে পড়ে গিয়েছিল। যদিও পূর্ত দফতরের দাবি, রাস্তার অবস্থা ততটাও খারাপ নয়। তবে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ওই রাস্তা দুর্ঘটনাপ্রবণ। কেউ কেউ দাবি করেছেন, এ দিনের দুর্ঘটনার পিছনে ভাঙা রাস্তার ভূমিকা রয়েছে। দ্রুত রাস্তা সারাই করা উচিত পূর্ত দফতরের।
রেলিং ভেঙে রাজারহাট-খড়িবাড়ি রোডের হাড়োয়া সেতুর উপর থেকে বেড়াচাঁপা-সল্টলেক করুণাময়ী রুটের বেসরকারি বাসটি শুক্রবার ওই খালে পড়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এমনিতেই রাস্তাটির ওই দশা। তার উপরে রাজারহাট-খড়িবাড়ি রোডে আলোর সমস্যাও রয়েছে। রাতে ছোট গাড়ি, বিশেষতযাত্রী বোঝাই অটো-টোটো চলার পক্ষে ওই রাস্তা বিপজ্জনক। পূর্ত দফতর কিছুটা রাস্তা সারাইয়ের কাজ করলেও জায়গাটি এখনও বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনার সঙ্গে কলকাতার সংযোগে গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তা। বিভিন্ন সময়ে পাথর কিংবা মালবোঝাই লরি ওই রাস্তা দিয়ে দ্রুত গতিতে চলে। সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টির কারণে রাস্তার এমন বেহাল দশা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁরা জানান, এক দিকে রাস্তায় ছড়িয়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। সেই সব নির্মাণ সামগ্রী এবং গর্ত এড়িয়ে চলতে গিয়ে যানবাহন একে অপরের কাছাকাছি চলে আসে। গাড়ির চাকা গর্তে পড়েও যায়। এ দিনের দুর্ঘটনার পিছনে তেমন কোনও কারণ থাকতে পারে বলেও দাবি স্থানীয়দের। পুলিশের একাংশের প্রাথমিক দাবি, বাসটি রাস্তার একে বারে ডান দিকে চলে এসেছিল। অন্য গাড়িকে টপকে বেরোনোর সময়ে সেটির স্টিয়ারিং বিকল হয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে গাড়ির চাকা গর্তে পড়ার জন্যেও কিছু ঘটেছে কিনা, তা-ও দেখছে পুলিশ।
অন্য দিকে বাসযাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, বাসটি জোরে চলছিল। সেতুর গর্তে পড়েই সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডান দিকে চলে যায় এবং রেলিং ভেঙে খালে পড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা সরিফুল আলির কথায়, ‘‘রাস্তার একাধিক জায়গায় ছোট-বড় একাধিক গর্ত হয়ে রয়েছে। দু’চাকা কিংবা তিন চাকার গাড়ির জন্য যা খুবই বিপজ্জনক। কোনও ভাবে ওই সব গাড়ির চালক অসতর্ক হলে চাকা গর্তে পড়ে দুর্ঘটনা অনিবার্য। আজকের বাস উল্টে যাওয়ার ঘটনা তারই প্রমাণ।’’ সমীর মণ্ডল নামে আর এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘ওই রাস্তায় যাত্রী তুলতে বাসগুলির মধ্যে রেষারেষি নতুন কিছু না। ফলে এমন ভাঙা রাস্তায় গতি বেশি হলে যে কোনও মুহূর্তে বিপদ ঘটতে পারে।’’ দীপেশ সরকার নামে এক নিত্যযাত্রীর বক্তব্য, ‘‘দিনে তবু গর্ত দেখা যায়। রাতে ওই রাস্তার অনেক জায়গায় আলো নেই। যে কারণে ওই রাস্তাটি শুধু মেরামতি করাই নয়, বরং আলো জ্বালানোর ব্যবস্থাও করা উচিত প্রশাসনের।’’
পূর্ত দফতরের স্থানীয় আধিকারিকেরা অবশ্য দাবি করেছেন, ওই রাস্তা খারাপ বলে যতটা উদ্বেগ দেখানো হচ্ছে, বিষয়টি তেমন নয়। রাস্তায় তেমন গর্ত নেই। বিভিন্ন সময়ে রাস্তার কাজ হয়ে থাকে। স্থানীয় দাদপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আব্দুল হাই জানান, সেতুর উপরে গাড়ির যাওয়া-আসার পথ পৃথক করা আছে। তার একাংশে পূর্ত দফতর ইতিমধ্যেই কাজ করেছে। আশা করা যায়, দ্রুত অন্য অংশের কাজও হবে।