তাপমাত্রা নামলেও কমছে না ডেঙ্গি, রাজ্যে আক্রান্ত ১২ হাজার
আনন্দবাজার | ০৯ নভেম্বর ২০২৫
তাপমাত্রা কমতে শুরু করলেওরাজ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ এখনও অব্যাহত। স্বাস্থ্য ভবনের অন্দরের খবর, মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি দক্ষিণবঙ্গে। ইতিমধ্যে কলকাতা পুর এলাকার বাসিন্দা এক শিশুরজ্বরে মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়, ওই শিশুর এনএস-১ পজ়িটিভ ছিল। অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি মালদহে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২,৫০৩।পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০,৮৭১। তাতে নতুন করে ১৬৩২ জন মশাবাহিত ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, শুধু অক্টোবরে, অর্থাৎ উৎসবের মরসুমেই ৩২০০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গির প্রকোপ এখনই রাতারাতি কমবে, তেমনটা একেবারেই নয়। বরং এখনও তিন-চার সপ্তাহ এর প্রকোপ থাকবে। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই জানাচ্ছেন, তাপমাত্রা সবে মাত্র চার ডিগ্রি সেলসিয়াস মতো নেমেছে। যত দিন না অন্তত ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামছে, তত দিন ডেঙ্গির মশার বংশবৃদ্ধির প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি হবে না।
অনির্বাণ আরও বলেন, ‘‘মশার আয়ু অন্তত ৩-৪ সপ্তাহ। এখন ডেঙ্গি আক্রান্তদের যে মশা কামড়াচ্ছে,তারা অন্তত আরও তিন সপ্তাহ বেঁচে থেকে রোগ ছড়াবে, এটাই স্বাভাবিক।’’ স্বাস্থ্য দফতরের সূত্র বলছে, চলতি বছরে ইতিমধ্যে কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা একহাজার পার করেছে। অন্য দিকে, উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, কলকাতা, মালদহ, হাওড়াতেওডেঙ্গির সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। শুধু এই ছ’টি জেলাতেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৮,৭০০। আর রাজ্যের সমস্ত জেলার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি। সেখানে মোট আক্রান্ত ২৩২৬ জন। এর পরেই রয়েছে মুর্শিদাবাদ। সেখানে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ২৩০৪ জন। আক্রান্তের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা হুগলিতে ১২৬১ জন এবং চতুর্থ স্থানে থাকা কলকাতায় ১০৫৭ জন সংক্রমিত।
স্বাস্থ্য দফতরের সূত্র বলছে, কলকাতার পরে মোট আক্রান্তের তালিকায় পর্যায়ক্রমে মালদহে ৯৫৯, হাওড়ায় ৭৬৬, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৬৭৮, পূর্ব বর্ধমানে ৫৩৩, নদিয়ায় ৫১৮, বাঁকুড়ায় ৪৩৭ জন সংক্রমিত। পাশাপাশি, পশ্চিম মেদিনীপুর, ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলা, ঝাড়গ্রাম, নন্দীগ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুরে আক্রান্তের সংখ্যা একশো থেকে চারশোর মধ্যেরয়েছে।