• বালাসনের গর্ভে ‘রক লেয়ার’, হাল ছাড়তে নারাজ পূর্তদপ্তর, আট মাসের মধ্যে দুধিয়ায় নতুন সেতু
    বর্তমান | ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: নদীগর্ভ ভরেছে ‘রক লেয়ারে’! তা সত্ত্বেও হাল ছাড়তে নারাজ পূর্তদপ্তর। তারা দুধিয়ায় বালাসন নদীতে সেই পাথর ভেদ করে তৈরি করছে পিলার। কারণ, আগামী আট মাসের মধ্যে তৈরি করা হবে নির্মীয়মাণ সেতু। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শিলিগুড়ি থেকে দুধিয়া দিয়ে মিরিক হয়ে পাহাড়ের যোগাযোগ সুগম হবে। পর্যটকদেরও সুবিধা হবে বলে প্রশাসন সহ বিভিন্ন মহলের প্রত্যাশা।

    পূর্তদপ্তরের (রোড) দার্জিলিং জেলার এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অরিন্দম মণ্ডল বলেন, বালাসন নদীতে ‘রক লেয়ার’ বা পাথরের স্তর পড়ায় অনুমোদিত সেতুর পিলার তৈরি করতে গিয়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তা হলেও নির্মাণ কাজ জোরকদমে চলছে। আগামী জুলাইয়ের মধ্যে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে।

    অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে বালাসন নদীর স্রোতের ধাক্কায় দুধিয়ায় ভেঙে যায় দীর্ঘদিনের পুরনো সেতু। এরপরই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেখানে নতুন সেতু নির্মাণে ঝাঁপিয়ে পড়ে পূর্তদপ্তর। ইতিমধ্যে তারা নদীগর্ভে পিলার তৈরির জন্য চারটি কুয়ো খুঁড়েছে। কিন্তু নদীগর্ভে রক বা পাথরের স্তর পড়েছে। পূর্তদপ্তর জানিয়েছে, অনুমোদিত লোহার সেতুটি দাঁড়িয়ে থাকবে চারটি পিলারের উপর। এজন্য তিনটি কুয়ো খোঁড়া হয়েছে। আর একটি কুয়ো খোঁড়ার কাজ চলছে। কিন্তু, নদীগর্ভে রয়েছে বিশাল পাথরের স্তর। তা কেটে কুয়ো ও পিলার তৈরি করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এতে সময় লাগছে প্রচুর। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রকল্পের কাজে গতি আরও বাড়ানো হয়েছে।

    প্রসঙ্গত, এক মাস আগে বিপর্যয়ে ভেঙে যাওয়া সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে নড়বড়ে ছিল। সেই জায়গায় নতুন সেতু তৈরির দাবি বহুদিনের। এজন্য বছর খানেক আগেই উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে তারা টেন্ডার করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের  কাজে হাতও দিয়েছে। এজন্য কার্শিয়াং মহকুমার দুধিয়ার অংশে ঠিকাদার সংস্থা ক্যাম্পও করেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপর্যয়ে ভেঙে যাওয়া সেতুর পাশেই নদীর ডাউন স্ট্রিমে নির্মীয়মাণ সেতুটি তৈরি করা হচ্ছে। এটি প্রায় ১৯০ মিটার লম্বা হবে। চওড়া হবে ১৬.৭ মিটার। পিলার কংক্রিটের হলেও সেতুটি হবে লোহার।

    পূর্তদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা বলেন, ইতিমধ্যে নির্মীয়মাণ প্রকল্পের জন্য লোহার সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়েছে। ২০২৬ সালের জুলাই মাসের মধ্যে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শেষ করার টার্গেট রয়েছে। তাই চলতি শুখা মরশুমে প্রকল্পের নির্মাণ কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের খরচ হবে ৫১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ার পর শিলিগুড়ি-দুধিয়া-মিরিক হয়ে পাহাড়ের সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে। তবে এখন হিউম পাইপ সেতু দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। এনিয়ে পর্যটন ব্যবসায়ীরাও বলেন, পাহাড়গামী পর্যটকদেরও সুবিধা হবে। • ফাইল চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)