প্রথম রবিবারই জমজমাট রাসমেলা দুপুর থেকেই জনস্রোত, এবারেও নেই বাংলাদেশের স্টল
বর্তমান | ১০ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: সপ্তাহের অন্যান্য দিনের থেকে রবিবারের রাসমেলার চিত্র কিছুটা অন্যরকম থাকে। তা সে মেলা শুরু হোক বা শেষের দিক। এবারে রাসমেলা বসার পর এদিনই ছিল প্রথম রবিবার। আর এই প্রথম রবিবারই সকাল থেকে ভিড় বাড়তে শুরু করে মদনমোহন মন্দিরে। শুধু মদনমোহন মন্দিরই নয়, দুপুর হতেই হাজার হাজার মানুষকে দেখা গিয়েছে ছোট-বড় যানবাহনে চেপে রাসমেলা সংলগ্ন এলাকায় এসে নামতে। আর এর ফলে এদিন দুপুর থেকেই রাসমেলা কার্যত জমজমাট হতে শুরু করেছে। আর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই রবিবারের রাসমেলা কার্যত জনপ্লাবনে পরিণত হয়। রাত পর্যন্ত সেই ভিড় ছিল।
তবে এবারের রাসমেলাতেও বাংলাদেশের স্টল নেই। ফলে ঢাকাই জামদানি বা মসলিন শাড়ির সম্ভার নেই। পাওয়া যাচ্ছে না নোনা ইলিশও। এই আফশোস কিছুটা থাকলেও প্রচুর মানুষ মজেছে পাঁশকুড়ার চপ, বেনারসি পান, ভাপাপিঠে প্রভৃতি খাওয়ায়। শুধু ছোটখাট স্ন্যাক্সই নয়, রাসমেলা মাঠে বিভিন্ন খাওয়ারের দোকানে মিলছে বিরিয়ানি, পোলাও থেকে শুরু করে আইসক্রিম, ফিশফ্রাই সহ হরেকরকম খাবার।
কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলার প্রস্তুতি বহু আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ আসায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয় ট্রাফিক বিভাগ। মেলা সংলগ্ন বেশকিছু রাস্তা নো-এন্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে এবারও। ফলে দূরদূরান্ত থেকে আসা লোকজন নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে রাসমেলা অভিমুখে আসে। আর এ কারণেই একটা বিরাট এলাকাজুড়ে দিনভর কার্যত জনস্রোত দেখা গিয়েছে।
মদনমোহন মন্দিরের সামনের রাস্তা, জেনকিন্স মোড়, এমজেএন স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তা, দেশবন্ধু মার্কেটের সামনের সড়ক, ব্যাঙচাতরা রোড প্রভৃতি রাস্তা দিনভর ব্যস্ত তো ছিলই, সন্ধ্যার পর ওসব সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ রাসমেলা অভিমুখে আসে। ওদিকে, জেলখানার সামনে থেকে শুরু করে এবিএন শীল কলেজের সামনে, জেনকিন্স স্কুলের সামনের রাস্তার দু’ধারেও প্রচুর দোকান বসেছে। রবিবার থাকায় অনেকে দুপুরেই পসরা সাজিয়ে ফেলেন।
রাসমেলার একপ্রান্তে যেমন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছে, অন্যপ্রান্তে বসেছে সবজি ও মাছের বাজার। মেলামাঠের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে বসেছে সবজি বাজার। বহু মানুষ সারা দিন মেলায় ঘুরে বিকেল ও সন্ধ্যায় খাওয়াদাওয়া সেরে অনুষ্ঠান দেখে, পরের দিনের বাজার করে বাড়ি ফিরছে।
দু’পাশে সারসার দোকান। রাস্তার মাঝে কাপড়, শতরঞ্চি বিছিয়েও বহু মানুষ নানা ধরনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি করতে বসেছে। কি নেই সেখানে? রুটি বেলার বেলুনচাকি থেকে শুরু করে পাপোশ, বাচ্চাদের ক্রিকেট ব্যাট থেকে শুরু করে পুজোর আসন। এসেছে শীতবস্ত্রও। জেনকিন্স মোড় থেকে শুরু করে দেশবন্ধু মার্কেটের দিক পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে রয়েছে এই দোকানগুলি। বসেছে বড় বড় কার্পেটের দোকান। কোচবিহার ক্লাবের ভিতরে বসেছে ইমিটিশনের গয়নার দোকান।
কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, প্রথম রবিবারেই রাসমেলা জমে উঠেছে। আশা করছি, মেলার পুরো সময়টাই মানুষের ভিড় থাকবে। ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখবেন।