নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: একাধিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বিকল। দেওয়ালে রয়েছে কাঠের গার্ডওয়াল। সেগুলির একাংশও খসে পড়ছে। ভেঙে গিয়েছে চেয়ারও। আরামবাগ শহরের রবীন্দ্র ভবনের এমনই শোচনীয় হাল। ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সংস্কৃতি মহলের মানুষ। বর্তমানে রবীন্দ্রভবন রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্বে আরামবাগ পুরসভা। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, ঐতিহ্যবাহী এই ভবন সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেয়নি পুরসভা। যদিও আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান সমীর ভান্ডারী বলেন, রবীন্দ্রভবন সংস্কারের প্রস্তাব রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন মিললেই হবে সংস্কার। যাতে দ্রুত ছাড়পত্র পাওয়া যায় তার জন্য রাজ্যের কাছে তদবির করব। এদিকে, আরামবাগ নাগরিক সমাজের সদস্য বিভাংশু দত্ত বলেন, রবীন্দ্র ভবন নিয়ে অনেক সুখকর স্মৃতি রয়েছে। এখানে এসি মেশিনের ব্যবহার বেশি দিন করা যায়নি। বর্তমানে আলো, সাউন্ডের মানও ভালো নয়। চেয়ারগুলির একাংশও ভেঙেচুরে গিয়েছে। ফলে অনেকেরই নানা অনুষ্ঠান করতে অসুবিধা হয়। তাই রবীন্দ্র ভবনের দ্রুত সংস্কার জরুরি। আরামবগের এক নাট্যকর্মী দিত্য রায় বলেন, এখন রবীন্দ্র ভবনে নাটক মঞ্চস্থ করতে প্রচণ্ড অসুবিধা হয়। ফলে রবীন্দ্র ভবন বুকিং করা হয় না বললেই চলে। ভবনটির আমূল সংস্কার প্রয়োজন।
আরামবাগ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে এই প্রেক্ষাগৃহ। ভবনের বাইরে কবিগুরুর মূর্তিও রয়েছে। কিন্তু রবীন্দ্র ভবনের ভিতরের পরিস্থিতি বেহাল। বিকল হয়ে গিয়েছে এসি যন্ত্রগুলি। কয়েকটি পাখা অবশ্য সচল রয়েছে। গ্রীষ্ম কালে যে কোনও ধরণের অনুষ্ঠানে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়। এমনকি, অনুষ্ঠানের আয়োজকদেরই ভাড়া করে আলো, সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে আসতে হয়। সাংস্কৃতিক জগতের মানুষজন বলছেন, সারা বছর নানা অনুষ্ঠান হত রবীন্দ্র ভবনে। এর জন্য বাইরে থেকেও বহু মানুষ আসেন। কিন্তু এই প্রেক্ষাগৃহের বর্তমান বেহাল দশা লজ্জায় ফেলে আমাদের। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষায় ছাদ চুঁইয়ে জল পড়তে দেখা গিয়েছে। ফলে ইতিমধ্যেই তার সংস্কার করা হয়েছে। বাকি কাজগুলিও যাতে করা যায় তার জন্য দরবার করা হচ্ছে। যদিও রবীন্দ্র ভবনের বেহাল অবস্থা নিয়ে বিজেপির বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় আরামবাগে বহু রাস্তাঘাট বেহাল। একইসঙ্গে রবীন্দ্র ভবনও ভগ্ন দশায় পরিণত হয়েছে। শহরের একমাত্র সরকারি প্রেক্ষাগৃহ এমন বেহাল হওয়ায় অনুষ্ঠান আয়োজনে সমস্যা হচ্ছে। -নিজস্ব চিত্র