• বাইকে চেপে ঘুরে বেড়াচ্ছে রামপুরহাটে ধর্ষণে অভিযুক্ত বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা, খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ! বিতর্ক
    বর্তমান | ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: বাইক দাপিয়ে তাঁকে শহরের রাস্তায় ঘুরতে দেখেছেন অনেকেই। কিন্তু পুলিশের দাবি, তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূলের রামপুরহাট শহর সহ সভাপতি তথা কাউন্সিলার প্রিয়নাথ সাউকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে আগেই। কিন্তু অভিযোগের পর ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মহিলার সঙ্গে ওই তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ট মুহূর্তের একটি ভিডিও এবং স্টিল ছবি ভাইরাল হওয়ায় শহরজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। 

    বিবাহিত হয়েও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক স্কুল শিক্ষিকাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ ও নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে প্রিয়নাথ সাউয়ের বিরুদ্ধে। দিন কয়েক আগে ওই শিক্ষিকা থানায় এসে ওই নেতার নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরের দিন আদালতে গোপন জবানবন্দিও দিয়েছেন অভিযোগকারী। পুলিশ মামলাও রুজু করেছে। অভিযোগ ওঠার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযুক্ত নেতাকে দল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহিষ্কার ও দলের সমস্ত পদ থেকে অপসারণ করে তৃণমূল। কিন্তু অভিযোগ জানানোর ১১ দিন পরেও তিনি অধরা। অথচ ওই নেতাকে শহরে বাইক চালিয়ে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। তবুও পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ বাড়ছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, আইন কি সবার জন্য সমান নয়? অনেকেই বলছেন, অভিযোগ ওঠার চারদিনের মাথায় ওই বহিষ্কৃত নেতা অ্যান্টিসিপেটারি বেলের আবেদন জানিয়েছেন। অভিযুক্ত প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাঁকে বেল পেতে সুযোগ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত গা ঢাকা দিয়েছে। তাঁর খোঁজ চলছে। 

    এদিকে এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মহিলার সঙ্গে ওই নেতার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হয়েছে দু’টি স্টিল ছবিও। স্টিল ছবিতে একটি খাটের মধ্যে এক যুবতীকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে রয়েছেন ওই নেতা। যা নিয়ে শাসকদলের বহিষ্কৃত ওই নেতাকে ঘিরে নতুন করে শোরগোল পড়েছে। বিজেপির শহর সভাপতি অর্পণ নাগ বলেন, তৃণমূলের কমবেশি সব নেতা এই রকমই। সব পাখি মাছ খায়, মাছরাঙার দোষ হয়। আজ তৃণমূল ওই কাউন্সিলারকে বহিষ্কার করে সাধু সাজছে, কিন্তু কারও এই স্বভাব তো একদিনে হয় না। তৃণমূল সব জেনেও দু’ বার তাঁকে পুরসভা ভোটে টিকিট দিয়েছিল। যদিও বিজেপির বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। বহিষ্কৃত ওই নেতার মোবাইল সুইচ অফ থাকায় এ বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। 

    এদিকে বহিষ্কারের পরও ওই নেতার ব্যক্তিগত অফিসে এসআইআর নিয়ে তৃণমূলের সহায়তা শিবির খোলা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। মহিলাদের অনেকেই সেখানে যেতে দ্বিধা বোধ করছেন। রবিবার ওই ওয়ার্ডে সহায়তা শিবির ঘুরে দেখতে আসেন এলাকার বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লক্ষ্য করেন, বহিষ্কৃত ওই নেতার ব্যক্তিগত অফিসে দলের সহায়তা শিবির খোলা হয়েছে। তিনি ওই শিবির অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দেন। এরপরই শিবির সরিয়ে নেওয়া হয়। যদিও আশিসবাবু বলেন, যেখানে সব লোক আসতে পারবে সেখানে শিবিরটি সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।    
  • Link to this news (বর্তমান)