• ঝাড়খণ্ড সীমানায় কাঠ পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য, মুরারইয়ে প্রচুর গাছের গুঁড়ি বাজেয়াপ্ত
    বর্তমান | ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া মুরারইয়ে কাঠ পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য অব্যাহত। শনিবার রাতে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া ঢুরিয়া গ্রামের কাছে গাছের গুঁড়ি বোঝাই চারটি বাইক আটক করে পুলিশ। যদিও পাচারকারীরা বাইক ফেলে রাস্তার জঙ্গলে গা-ঢাকা দেওয়ায় তাদের ধরতে পারেনি পুলিশ। আটক করা বাইকের সূত্র ধরেও পুলিশের পক্ষে পাচারকারীদের খোঁজ পাওয়া মুশকিল। পুলিশ জানিয়েছে, বাইকগুলির নম্বর প্লেটই নেই। ইঞ্জিন ও বডির নম্বর ‘টেম্পারিং’ করা হয়েছে।

    মুরারই-ঝাড়খণ্ড সীমানায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জঙ্গল রয়েছে। একসময় গভীর জঙ্গল ছিল। কাঠ পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যে এখন অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের পাচারকারীরা রাতের অন্ধকারে সেই জঙ্গলে থাকা গাছ কেটে পাচার করছে। সীমানায় ধরা পড়ার ভয়ে গ্রামের ভিতরের রাস্তা হয়ে মুরারইয়ের ঢুরিয়া হয়ে ফের ঝাড়খণ্ডে ঢুকে পড়ছে তারা। মুরারই থানার পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাতে গোপন সূত্রে তাদের কাছে কাঠ পাচারের খবর আসে। সেইমতো ঢুরিয়া গ্রামে যায় পুলিশ। তারা লক্ষ্য করে, একের পর এক বাইকে গাছের গুঁড়ি চাপিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। পুলিশ রাস্তা আটকাতেই বাইক ফেলে জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায় পাচারকারীরা। তিনটি বাইক আটক করা হয়। পরে জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে গাছের গুঁড়ি সহ আর একটি বাইক পায় পুলিশ।

    পুলিশ জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ড থেকে গাছের গুঁড়িগুলি কেটে বাইকে চাপিয়ে ঢুরিয়া হয়ে ফের ঝাড়খণ্ডের দিকে যাচ্ছিল। প্রতিটি বাইকের ইঞ্জিন ও বডি নম্বর টেম্পারিং করা রয়েছে। যাতে পুলিশ পাচারকারীদের হদিশ না পায়। পুলিশের দাবি, চারটি গাছের গুঁড়ি উদ্ধার হয়েছে। একটি মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। 

    স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন মরশুমে কৌশল বদলে পাচারকারীরা কারবার চালাচ্ছে। এর আগে অভিনব কায়দায় ঝাড়খণ্ডের মহেশপুর থেকে মুরারই হয়ে মুর্শিদাবাদে রক্তচন্দন কাঠ পাচার করতে গিয়ে এসটিএফের হাতে দু’জন ধরা পড়েছিল। গত ৯ফেব্রুয়ারি রাতের অন্ধকারে রামপুরহাটের ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া হস্তিকাঁদা জঙ্গল থেকে দামি লাল চন্দন গাছ কেটে ট্রাক্টরে চাপিয়ে পাচার চলছিল। পুলিশ হানা দিয়ে দু’টি লাল চন্দন গাছের গুঁড়ি বোঝাই একটি ট্রাক্টর, একটি মোটর বাইক ও একটি চারচাকা গাড়ি সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। স্থানীয় বাসিন্দা সামসুল আলম, ওলিউল্লা শেখরা বলেন, ভৌগোলিক কারণেই মুরারইকে করিডর করে কাঠ পাচারে উৎসাহ বেড়েছে কারবারিদের একাংশের। পুলিশ জানিয়েছে, পাচারচক্রে জড়িতদের ধরতে সবরকম আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)