• এখন বাদ পড়লেও পরে ভোটার তালিকায় নাম তোলার সুযোগ আছে, মন্তব্য সুকান্তর
    বর্তমান | ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও কলকাতা: বাস্তব ছবি বুঝতে পেরে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে কি ঢোঁক গিললেন বিজেপি নেতা? রাজনৈতিক মহল থেকে উঠে এল সেই প্রশ্নটাই। আর তা নিয়ে শাসক-বিরোধী তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।

    রবিবার জলপাইগুড়িতে দলীয় কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেখানেই তাঁর মন্তব্য, এসআইআরে বাদ পড়লেও পরে আবেদনের ভিত্তিতে ভোটার তালিকায় নাম উঠবে। ভয়ের কোনও কারণ নেই। এসআইআরে নাম না উঠলে সর্বোচ্চ ওই ব্যক্তি ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না। কিন্তু সেই ব্যক্তি ফের নাম তোলার সুযোগ পাবেন। আবেদনের ভিত্তিতে নথি থাকলে পরের ভোটেই তাঁর নাম ভোটার তালিকায় উঠে যাবে। 

    এই বক্তব্য সামনে আসার পর রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে, বিজেপি কি কোথাও বুঝতে পারছে এসআইআর নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়-ভীতি ক্রমশ বাড়ছে। আর সেই কারণেই বিজেপি থেকে মানুষ মুখ ঘোরাতে শুরু করে দিয়েছেন। আর সেই কারণেই সুকান্ত মজুমদার আশ্বাস দেন, কেউ যদি ভারতের নাগরিক হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তাঁকে তাড়ানোর প্রশ্ন আসছে কেন? আসলে তৃণমূল এসআইআর নিয়ে সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে।

    পাল্টা সুকান্তকে জবাব দেন তৃণমূলের রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি যে এসআইআর এনেছে, সেখানে হিন্দুদের সবথেকে বেশি পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। মতুয়া, রাজবংশি, নমঃশূদ্রসহ সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ ক্রমশ বাড়ছে। জেলায় জেলায় বিজেপির কর্মীরা সেটা বুঝতে পারছেন। সেক্ষেত্রে ওদের দলের এক নেতা বলেও ফেলেছেন আগামী নির্বাচনে বিজেপি ৩০টি আসন পাবে কি না সন্দেহ। দেরিতে হলেও গ্রাউন্ড রিয়ালিটি বা বাস্তব ছবিটা বুঝতে পারছেন সুকান্ত মজুমদার। তাই উনি উলটো সুর গাইছেন। বিজেপি নেতাদের এতদিনের বক্তব্য ছিল শুধুমাত্র গল্প আর তঞ্চকতা, তা সুকান্তবাবুর কথাতেই পরিষ্কার।

    এদিকে এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে এদিন জলপাইগুড়িতে বাংলার সরকারকে কটাক্ষ করেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তাঁর বক্তব্য, এরপর তো কারও জ্বর হলেও বলবে এসআইআর আতঙ্কে জ্বর হচ্ছে। সুকান্ত মজুমদারের প্রশ্ন, ১২টি রাজ্যে এসআইআর হচ্ছে। এসআইআর আতঙ্কে যদি মৃত্যু হতো, তাহলে সব জায়গায় হতো। কোথাও তো হচ্ছে না। 

    এসআইআর চলাকালীন এদিন থেকে জলপাইগুড়িতে সিএএ ক্যাম্প চালু করেছে বিজেপি। দলের জেলা কার্যালয়ে ওই ক্যাম্পে বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষজন এদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় ভিড় জমান। স্ট্যাম্প পেপারে এফিডেভিট করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের উত্তরবঙ্গ মতুয়া সংঘ চ্যারিটেবল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ধর্মীয় সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। ওই শংসাপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে এদেশে আসা হিন্দুদের অনলাইনে সিএএর ফর্ম ফিলআপ করানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক বাবুলাল বালা। জলপাইগুড়ি জেলার প্রতিটি মণ্ডলে দলের তরফে সিএএ ক্যাম্প করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামল রায়।
  • Link to this news (বর্তমান)