• পুরসভার নয়া বিজ্ঞাপন নীতিকে চ্যালেঞ্জ, মামলা দায়ের হাইকোর্টে
    বর্তমান | ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এবার আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল পুরসভার নয়া বিজ্ঞাপন নীতি। এই নীতির ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই শহরের তিনটি রাস্তাকে বেসরকারি বিজ্ঞাপনী কাঠামো মুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজেই যত্রতত্র বিজ্ঞাপনের কারণে দৃশ্যদূষণ কমানোর পক্ষে সওয়াল করেন। তারপরই পার্ক স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট এবং থিয়েটার রোড—এই তিন রাস্তায় কোনও বেসরকারি বিজ্ঞাপনী কাঠামো না রাখার সিদ্ধান্ত হয়। পুরসভার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে একাধিক বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থা। তাদের সংগঠনের তরফে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। সম্ভবত আগামী ১২ নভেম্বর, বুধবার এই মামলার শুনানি। 

    ওই তিনটি রাস্তায় ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি বা বিল্ডিংয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য ১৫টি বেসরকারি ‘অ্যাড-স্পেস’ বা লোহার কাঠামো ছিল। সেগুলি খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। অনেকাংশে তা কার্যকরও হয়ে গিয়েছিল। এমনকি, এই তিনটি রাস্তায় সরকারি আওতায় প্রায় ১৮ হাজার বর্গফুট বিজ্ঞাপনী কাঠামো তৈরি করতে ই-অকশনের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে পুর-কর্তৃপক্ষ। ই-অকশনে বার্ষিক বিজ্ঞাপন ফি বাবদ ‘বেস-প্রাইস’ রাখা হয়েছে ১৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, অনলাইন নিলামে এর উপর যে যত বেশি দর হাঁকবে, তাকেই সুযোগ দেবে পুরসভা। কিন্তু এই মামলার ফলে গোটা প্রক্রিয়াই প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

    পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগ জানাচ্ছে, সমস্ত বেসরকারি বিজ্ঞাপনের কাঠামো সরিয়ে এই তিন রাস্তায় শুধুমাত্র সরকার অনুমোদিত বা সরকারের আওতাভুক্ত বিজ্ঞাপনী কাঠামো থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেখানে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা যেমন বিজ্ঞাপন দেয়, সেভাবেই দিতে পারবে। এই মামলায় বিজ্ঞাপনদাতা সংগঠনের তরফে রুটি-রুজির প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে। মামলাকারী ‘আউটডোর অ্যাডভার্টাইজিং অ্যাসোসিয়েশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর এক সদস্য বলেন, ‘এই যে তিনটি রাস্তায় পুরসভা বেসরকারি অ্যাড-স্পেস বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে কিন্তু নো-হোর্ডিং জোন করছে না। এই সমস্ত প্রাইভেট হোর্ডিং-স্পেস যাঁদের জায়গায় রয়েছে, তাঁদের রুটি-রুজি এর উপর নির্ভর করছে। বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থা পুরসভাকে যেমন মোটা টাকা ফি দেয়, তেমন এই জমি বা বাড়ির মালিকদেরও ভাড়া মেটাতে হয়। তার উপরেই অনেকের সংসার চলে। এটা তাঁদের মৌলিক অধিকার। পুরসভা সেটা বন্ধ করে দিতে পারে না। তাই আমরা কোর্টে মামলা করেছি।’ পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘যা এতদিন ধরে চলে এসেছে, সেটা খারাপ হলেও চলতে দিতে হবে, এমন তো কথা নেই! আদালতেই আমরা নিজেদের বক্তব্য জানাব।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)