আদালতের নির্দেশে জেলে বসে এসএসসির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা দিয়েছিলেন জনৈক পরীক্ষার্থী। কিন্তু ফল প্রকাশে পর্বে অনুপস্থিত বলে চিহ্নিত হন তিনি। রবিবার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই কয়েক ঘণ্টায় ভোল পাল্টেছে এসএসসি। অবিলম্বে সেই অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর নম্বরসুদ্ধ ফল প্রকাশ হয়ে গিয়েছে।
আবদুস সাত্তার নামে ওই চাকরিপ্রার্থী বোলপুর জেলে বসে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে সেই পরীক্ষা হওয়ার কথা জানিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। অথচ শুক্রবার রাতে রেজাল্ট বেরোনোর পরে দেখা যায়, সাত্তার পরীক্ষায় অনুপস্থিত! এসএসসির অবশ্য ব্যাখ্যা, তাদের পরীক্ষাকেন্দ্রের তালিকায় বোলপুর জেলের নাম না-থাকাতেই বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
সাত্তারের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “রবিবার সকালে বিষয়টি সামনে আসে। বিকেলের মধ্যে এসএসসি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে জানায়, সাত্তার পরীক্ষা দিয়েছেন। ৬০ এর মধ্যে তিনি কত পেয়েছেন, তাও জানিয়েছে এসএসসি।” এই ঘটনার পরেই এসএসসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে এসএসসির কার্যকলাপ পশ্চিমবঙ্গের মুখ পুড়িয়েছে। দুর্নীতির জেরে নিয়োগ বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বহু শিক্ষক যোগ্য হয়েও চাকরি হারিয়ে ফের পরীক্ষায় বসেছেন। ফের এক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়া, না-দেওয়া নিয়ে ধন্দে স্বভাবতই নানা মহলে প্রশ্ন ওঠে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ নির্দেশ দেন, বোলপুর জেলে বসে পরীক্ষা দিতে পারবেন আবদুস সাত্তার। এসএসসি-ও জানিয়েছিল, তারা পরীক্ষা নিতে পারবে। ১৮ সেপ্টেম্বর এসএসসি কোর্টে জানিয়েছিল, সাত্তার পরীক্ষা দিয়েছেন এবং কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক, উত্তরপত্র যথাযথ ভাবে বাক্সবন্দি করে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ফলে ফল বেরোতে বিভ্রান্তি ছড়ায়।
এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘ওই পরীক্ষার্থী বোলপুর জেলে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু বোলপুর জেল তো পরীক্ষাকেন্দ্র বলে তালিকায় ছিল না। আবারওই পরীক্ষার্থীর যে স্কুলে সিট পড়েছিল, সেখানেও ওএমআরশিট গিয়েছিল। সেখানে তিনি অনুপস্থিত লেখা হয়। এসবের ফলেই সিস্টেমে ওই ওই পরীক্ষার্থীকে অনুপস্থিত দেখিয়েছে। যদিও ওঁর ওএমআর শিট অন্য পরীক্ষার্থীদের মতোই স্ক্যান করা মূল্যায়ন হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসতেই আমরা ওই পরীক্ষার্থীর ফল জানিয়ে দিয়েছি।’’