কয়েক মাস আগেও একই ঘটনার সাক্ষী ছিল এলাকা। অমাবস্যার কটালে প্রায় ১২০০ মিটার বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল গোবর্ধনপুর। সে সময়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা সেচ দফতরের চেয়ারম্যান সমীরকুমার জানা। আশ্বাস দিয়েছিলেন রিং বাঁধ তৈরির। প্রশাসনের উদ্যোগে কিছুটা অংশে কাজ হলেও বাকি অংশের কাজ জমিজটে আটকে যায়।
সেচ দফতর সূত্রের খবর, গোবর্ধনপুরের দক্ষিণ দিকের প্রায় ১২০০ মিটার মাটির বাঁধের মধ্যে ৯০০ মিটারে রিং বাঁধ তৈরি করা হলেও বাকি ৩০০ মিটার অংশে জমি না মেলায় কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। ফলে প্রতি কটালেই সমুদ্রের ঢেউ গিয়ে আছড়ে পড়ছে সেই অংশে। নতুন তৈরি রিং বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন দশকে এই বাঁধটি অন্তত সাত বার তৈরি হয়েছে, কিন্তু কোনও বার টেকেনি। বছরখানেক আগে কংক্রিটের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পরে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল নতুন রিং বাঁধের জন্য। প্রায় ৬০০ মিটার কাজ শেষ হওয়ার পরে পরবর্তী বরাদ্দে আরও ৩০০ মিটার তৈরি হয়। তবে বাকি ৩০০ মিটার জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় কাজ থেমে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা ভারতী পাটলার আক্ষেপ, “বার বার বাঁধ ভাঙলে ঘরবাড়ি জলে ভাসে। বাচ্চাদের নিয়ে দূরে পালাতে হয়। পরে আবার ফিরে আসতে হয়। স্থায়ী বাঁধের দাবি জানালেও কিছুই হচ্ছে না।” গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে দায়সারা কাজ হওয়ায় বছর ঘুরতেই বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।
বিজেপি নেতা অশোক পুরকাইতের অভিযোগ, “নদীবাঁধ তৈরিতে ব্যাপক দুর্নীতি রয়েছে। ঠিকাদার থেকে প্রশাসনিক আধিকারিক— সকলেই জড়িত। দুর্নীতি না থাকলে বাঁধও ভাঙবে না।”
পাথরপ্রতিমার বিডিও মহম্মদ ইজ়রাইল বলেন, “জমিজটের সমস্যা কিছুটা আছে। সেচ দফতর মেরামতির কাজ করছে। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
অন্য দিকে, বিধায়ক সমীরকুমার জানার দাবি, নিম্নচাপ ও কটালের জোয়ারে রিং বাঁধ উপচে জলঢুকেছে। যে সব ঘরে জল ঢুকেছে, সেখানে কেউ থাকতেন না। জমিজট মিটলেই স্থায়ী বাঁধ তৈরি হবে। দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেও তাঁর দাবি।