মদের দাম বাড়াচ্ছে রাজ্য সরকার, শুধু একটির দাম অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল আবগারি দফতর
আনন্দবাজার | ১০ নভেম্বর ২০২৫
ইংরেজি নববর্ষের আগেই পশ্চিমবঙ্গে বাড়ছে সব ধরনের মদের দাম। সম্প্রতি আবগারি দফতরের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ১ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে নতুন অতিরিক্ত আবগারি শুল্ক কার্যকর হতে চলেছে। তার ফলে এই নতুন নীতিতে রাজ্যে বিয়ার বাদে দেশি ও বিদেশি-সহ সব ধরনের মদের উপর শুল্কের হার বৃদ্ধি করা হবে। নতুন শুল্কহার কার্যকর হওয়ার আগে রাজ্যের সমস্ত উৎপাদক, ডিস্ট্রিবিউটর ও হোলসেল বিক্রেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, ৩০ নভেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে যতটা সম্ভব পুরনো দামে স্টক বিক্রি করে ফেলতে হবে। কারণ, ওই তারিখের পর পুরনো দামে আর মদ বিক্রি করা যাবে না।
প্রশাসন জানিয়েছে, যে সব স্টক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিক্রি করা সম্ভব হবে না, তাদের উপর নতুন হার প্রযোজ্য হবে। সেই সমস্ত বোতলে নতুন দামের স্টিকার লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাতে গ্রাহকেরা সংশোধিত মূল্যের তথ্য স্পষ্ট ভাবে জানতে পারেন। সরকারি বিজ্ঞপ্তির কপি ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির কাছে পাঠানো হয়েছে। নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার আগে প্রত্যেক ব্র্যান্ডমালিক ও পরিবেশককে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় নিবন্ধন ও লেবেল পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থ দফতরের এই সিদ্ধান্তের ফলে ডিসেম্বরের শুরুতেই রাজ্যে মদের বাজারে কিছুটা অস্থিরতা দেখা দিতে পারে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। তবে প্রশাসনের আশা, ব্যবসায়ীদের আগাম প্রস্তুতির ফলে বড় ধরনের জটিলতা হবে না। আবগারি দফতরের বিজ্ঞপ্তি জারির পর কোন মদের দাম বেড়ে কত হচ্ছে, সেই বিষয়ে অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে মদ ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে রাজ্য সরকারের রাজস্ব আদায়ও বৃদ্ধি হবে বলে মনে করছে প্রশাসনিক কর্তারা। তবে মদের এই দাম বৃদ্ধির ফলে রাজস্বের পরিমাণ কতটা বৃদ্ধি হবে তা অবশ্য এখনই ঠাহর করে বলা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন আবগারি দফতরের কর্তারা। পয়লা ডিসেম্বর থেকে নতুন মূল্য কার্যকর হয়ে যাওয়ার মাসখানেক পরেই রাজ্য সরকারের রাজস্ব কতটা বৃদ্ধি হল তা বোঝা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। বাংলার রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনের কারণে বেশ কিছু নতুন ঘোষণা হতে পারে রাজ্য সরকারের তরফে। তাই এই দাম বৃদ্ধির কারণে রাজস্ব বৃদ্ধি হলে রাজ্য সরকার বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে সেই অর্থ খরচ করতে পারবে।