SIR-এর বিরোধীতায় সুপ্রিম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস
আজকাল | ১০ নভেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাংলায় এসআইআর শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের শাসক দল বারেবারে সাধারণ মানুষকে, এসআইআর নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা দিয়েছেন, বার্তা দিয়েছেন পাশে থাকার। এর মাঝেই পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস, ভোটার তালিকার এসআইআর-এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।
আবেদনকারীর আইনজীবী বিহার এসআইআর মামলার শুনানিরত বিচারপতি সূর্য কান্তের সামনে এই বিষয়টির উল্লেখ করেন বলে খবর সূত্রের। কিন্তু কেন বাংলার হাত শিবির এসআইআর-এর বিরোধিতা করে আচমকা শীর্ষ আদালতে? প্রাথমিক কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, প্রক্রিয়ায় ত্রুটির কথা উল্লেখ করে সাধারণ মানুষ দলের কাছে আবেদন করেছে ব্যাপক হারে, ফলে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস শীর্ষ আদালতে যেতে বাধ্য হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আজকাল ডট ইন যোগাযোগ করেছিল পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির মুখপাত্র সুমন রায় চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির অনুমতি নিয়ে এই বিষয়ে দ্বারস্থ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর, কেন আচমকা এই সিদ্ধান্ত?
সুমন জানাচ্ছেন, 'বিহারের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি ৪৪ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছে। আমাদের মনে হয় না, সঠিক প্রক্রিয়ায় ওই নাম বাদ গিয়েছে। কারণ ওই ফর্ম যখন বাংলায় এসেছে, ফর্ম চেঞ্জ করতে হয়েছে। তাছাড়া আমাদের প্রশ্ন, কেন ২০০২-এর তালিকা ধরেই এই এসআইআর করা হচ্ছে? এটাই নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের মূল প্রশ্ন ছিল। কেন ২০০২-এর পরের কোনও ভোটার তালিকাকে বেঞ্চমার্ক ধরা হচ্ছে না। ম্যাপিং, লিংকিয়ে অনেক ধরনের সমস্যা হচ্ছে। এতে যেটা হবে, বহু বৈধ ভোটারের নাম বাদ চলে যাবে এবং বেনোজল রয়ে যাবেই।'
কংগ্রেস আরও একটি পয়েন্ট তুলে ধরছে এই বিষয়ে। সুমন রায় চৌধুরী জানাচ্ছেন, 'আরও একটি বিষয় রয়েছে। ১৯৮৭ সালের আগে যাঁদের জন্ম তাঁদের নিজেদের তথ্য দিলেই হবে। ১৯৮৭ সালের পরে যাঁদের জন্ম, তাঁদের বাবা-মা কারও একজনের তথ্য দিলেই হবে। ২০০৪ সালের পরে যাঁদের জন্ম, তাঁদের নিজেদের, বাবা-মায়ের সব তথ্য দিতে হবে। আমাদের বক্তব্য, এসআইআর-এর নামে, ব্যাকডোর দিয়ে এনআরসি করার চেষ্টা চলছে।' অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো যে আশঙ্কা করছেন, একই আশঙ্কা হাত শিবিরেরও।
প্রদেশ কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল সর্বদলীয় বৈঠকে এই দুটি ছাড়াও, মোট ছ' দফা দাবি রেখেছিল বলে দাবি, অভিযোগ, কমিশন তার কোনওটির প্রয়োগ করেনি। ফলে আর কোনও উপায়ান্তর না থাকায় আমরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি।
এসআইআর। ভেঙে বললে, ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এই এসআইআর-এর পিছনের উদ্দেশ্য কী আদতে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এ রাজ্যে কেন এসআইআর-এ তাড়াহুড়ো, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। বুধবারেই জানা গিয়েছিল, এসআইআর-এর প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কোর্টে যাবে কেরল সরকার।
বুধবার কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ঘোষণা করেছেন, রাজ্য ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR)বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে আইনিভাবে চ্যালেঞ্জ জানাবে কেরল সরকার। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে অনলাইনে আয়োজিত সর্বদলীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে বিজয়ন জানান, আসন্ন স্থানীয় সংস্থা নির্বাচন বিবেচনা করে, সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলি এসআইআর'কে চ্যালেঞ্জ করার জন্য আইনি পরামর্শ চাইবে। বিজয়নের মতে, গত লোকসভা নির্বাচনের একটি আপডেট তালিকা কার্যকর থাকা সত্ত্বেও ২০০২ সালের ভোটার তালিকাকে ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করার কারণ কী? ঠিক এই পয়েন্ট তুলে ধরেই SIR-এর সমালোচনা করেন তিনি এবং এই পদক্ষেপকে 'আনসায়েন্টিফিক' বলে উল্লেখ করেছেন। উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।