• ‘অচলায়তন ভেঙে মুক্তচিন্তার অঙ্গন হবে বাংলা’, দম্পতি রিয়া-রাখিকে শুভেচ্ছা অভিষেকের
    প্রতিদিন | ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সমাজের চেনা ছকের বাইরে তাঁরা। মুখে কিছু না বললেও দুই বঙ্গকন্যা যেন কাজে প্রমাণ দিয়েছেন, ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট…’। আর সেই আকাশেই তো দেখা যায় রামধনুর সাত রং। প্রায় বিনা বাধায় সদ্য়ই বিয়ে করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামেশ্বরপুর গাববেড়িয়ার রিয়া ও রাখি। ভিড়ের মাঝেও আলাদা দুই বঙ্গকন্যাকে ‘কুর্নিশ’ ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

    সোমবার সকালে অভিষেকের নির্দেশে মথুরাপুর লোকসভার সাংসদ বাপি হালদার সংবর্ধনা সভার আয়োজন করেন। সেখানে ফের মালাবদল করেন নববিবাহিত দুই তরুণী। ওই অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না অভিষেক। তবে বাপি হালদারকে ফোনের মাধ্যমে দু’জনকে শুভেচ্ছা জানান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। এরপর সোশাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্টও করেন। লেখেন, “সামাজিক বেড়াজাল ছিন্ন করে সুন্দরবনের দুই তরুণী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন, যা বাংলা তথা দেশের কাছে দৃষ্টান্তস্বরূপ উদাহরণ ? স্বাধীন ভারতের স্বাধীন মানসিকতার, মানবিকতার, মুক্তচিন্তা ভাবনার ও সাহসিকতার। সারাজীবন একসাথে থাকার অঙ্গীকার নিয়ে তাঁরা যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তা বাংলার কাছে ও বাঙালির কাছে গর্বের। সংকীর্ণতার গণ্ডি পেরিয়ে সামাজিক মতভেদ, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সাংস্কৃতিক বাধা এসব অতিক্রম করে লক্ষ্যে স্থির থেকেছেন ? প্রকৃত ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিয়েই। তাঁদের এই পবিত্র ভালোবাসা চিরঅক্ষয় থাকুক। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারের বাসিন্দা রিয়া সর্দার ও বকুলতলার বাসিন্দা রাখি নস্কর এই নবদম্পতিকে আমি অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং হার্দিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। পরমেশ্বরের আশীর্বাদ বর্ষিত হোক ওঁদের জীবনে। রঙিন হয়ে উঠুক আগামীর পথ।” অভিষেকের আশা, “বাংলাই আগামীকে পথ দেখায়। এই সাহসিকতার জোরেই আমাদের সমাজ অচলায়তন ভেঙে ও সংকীর্ণতাকে পিছনে ফেলে মুক্ত চিন্তাভাবনার অঙ্গন হয়ে উঠবে।”

    রিয়া এবং রাখি দু’জনেই নৃত্যশিল্পী। এক বান্ধবীর মাধ্যমে তাঁদের আলাপ। শুরু ফোনালাপ। মাত্র কয়েকদিনেই একে অপরের বন্ধু হয়ে যান। ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সিদ্ধান্ত নেন একসঙ্গে ঘর বাঁধার। সমাজের অচলায়তন ভেঙে এগিয়ে যাওয়া মোটেও সহজ ছিল না। তা সত্ত্বেও বিহারের এক মন্দিরে ভগবানকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করেন দু’জনে। রাখির বাড়িতে রিয়া থাকতে শুরু করেন। প্রথম দিকে সব ঠিকই ছিল। তারপর মোড় ঘোরে সম্পর্কের। রাখির বাড়িতে ‘দুব্যবহারে’র ফলে বাড়ি বদলের সিদ্ধান্ত। রিয়া নিজের বাড়ি ফিরে আসেন। বিয়ের কথা জানান। মেনে নেয় পরিবার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামেশ্বরপুরের স্থানীয় এক ক্লাব সদস্যদের সহায়তায় মন্দিরে আবারও বিয়ে করেন। ঠিক যেন রূপকথা! আর সেই রূপকথার বিয়ে নিয়ে গ্রামজুড়ে যেন উৎসবের মেজাজ। শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছেন নবদম্পতি।
  • Link to this news (প্রতিদিন)