• এই প্রথম, এবার গ্রামেই ভোট দেবে ‘মাওবাদী মুক্ত’ চোরমারা
    বর্তমান | ১১ নভেম্বর ২০২৫
  • পাটনা: মাওবাদীদের ডেরা। এটাই ছিল গ্রামের পরিচয়। খুন, ছিনতাই, অপহরণ-রোজের ঘটনা। দিনের বেলাতেও বাইরে পা রাখতে ভয় পেতেন বাসিন্দারা। টানা ২৫ বছর এভাবেই কাটিয়েছে বিহারের জামুই জেলার চোরমারা। তবে বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি আমূল বদলেছে। মাওবাদী আতঙ্ক ঘুচেছে। নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন বাসিন্দারা। শেষ দফায় জামুই জেলার এই গ্রামে ভোটগ্রহণ। মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। দীর্ঘ দু’দশক পর নির্ভয়ে এখানেই ভোট দেবেন গ্রামের বাসিন্দারা। 

    গ্রামের যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একসময় বোমা মেরেছিল মাওবাদীরা, এবার সেখানেই ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা হয়েছে। এতদিন গ্রামের বাসিন্দারা ভোট দিতে চাইলে যেতে হত ২২ কিলোমিটার দূরের বারহাট ব্লকের সরকারি স্কুলে। শারীরিক অসুস্থতা বা ভয়ে ভোট দেওয়াই হত না অধিকাংশের। এবার পরিস্থিতি পালটেছে। গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় কোদা। তিনি মাওবাদী কমান্ডার বেলেশ্বর কোদার পুত্র। একসময় এলাকার ত্রাস ছিলেন এই বেলেশ্বর। সঞ্জয় নিজেও বাবাকে যমের মত ভয় পেতেন। কিন্তু আজকের ছবিটা একেবারে আলাদা। ভোটকেন্দ্র সাজাচ্ছেন সঞ্জয় নিজেই। তাতে তিনি যেমন খুশি, গ্রামের মানুষজনও খুশি। সঞ্জয়ের স্ত্রী এই স্কুলেরই শিক্ষিকা। তাঁর কথায়, ‘একসময় আতঙ্কে বেঁচে ছিলাম। এখন আমরা ভোট দেব—এ যেন উৎসব।’ শুধু কোদা পরিবার নয়, গ্রামের প্রতিটা পরিবার ভোট উৎসবে শামিল হতে প্রস্তুত। রাস্তাঘাট, জল ও বিদ্যুৎ সব এসেছে গ্রামে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী সদা সতর্ক থাকছে। সিআরপিএফ জানিয়েছে, বিহারের এই গ্রাম ‘মাওবাদী মুক্ত’ হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন করাই তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য।  
  • Link to this news (বর্তমান)