• যন্তরমন্তরের কাছে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী যুবক, সুরক্ষা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন
    বর্তমান | ১১ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সোমবার সকালে সংসদ ভবন থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করলেন মধ্যপ্রদেশের এক যুবক। পার্লামেন্ট স্ট্রিটের অদূরেই যন্তরমন্তরে এহেন ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এহেন একটি ভিভিআইপি এলাকায় কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঢুকতে পারলেন বছর চল্লিশের লোকেন্দ্র, তা নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ দিল্লির যন্তরমন্তরের অদূরে শুধুই সংসদ ভবন অবস্থিত, তা নয়। এর মাত্র কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই নর্থ ব্লক, সাউথ ব্লক, বিজয় চক, রাষ্ট্রপতি ভবন, রেলভবন, শাস্ত্রীভবনের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কার্যালয় রয়েছে। অর্থাৎ, ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী স্থানেই তামাম কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের কাজকর্ম হয়ে থাকে। এই প্রেক্ষিতেই সটান আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা আদতে দিল্লির আমজনতার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। স্বাভাবিক কারণেই এক্ষেত্রে কাঠগড়ায় উঠছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রকের আওতাভুক্ত দিল্লি পুলিসের ভূমিকাও। যন্তরমন্তরের যে বিস্তীর্ণ এলাকা বিক্ষোভ-অবস্থানের জন্য অনুমোদিত, সেখানে দু’দিক দিয়েই ঢোকার ব্যবস্থা রয়েছে। দু’দিকেই মোট চারটি ডোর মেটাল ডিটেক্টর ফ্রেম রয়েছে। একটি পুলিস ক্যাম্পও আছে। দু’দিকেই গার্ডরেলের দ্বিস্তরীয় ব্যারিকেড রয়েছে। এরপরেও কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করা সম্ভব? 

    সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’দিকের সবক’টি ডোর মেটাল ডিটেক্টর ফ্রেম দিয়েই প্রবেশ এবং প্রস্থানের পর স্পষ্ট হয়েছে, যন্তরমন্তরে নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনি আসলে ফস্কা গেরো! কারণ চারটি মেটাল ডিটেক্টরের কোনওটিই কাজ করে না। এদিন ঘটনার পর হ্যান্ড ‘ফ্রিস্কিং’য়ের জন্য পুলিসকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে বটে, কিন্তু অন্যদিন তাঁরা নাম-কা-ওয়াস্তেই থাকেন। অর্থাৎ, বিক্ষোভ-সমাবেশ চলাকালীন যেকেউ আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা অন্য হাতিয়ার নিয়ে এসে সভাস্থলে তাণ্ডব চালাতে পারে। এই ব্যাপারে পুলিসকর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, যন্তরমন্তর এলাকা কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। বিশাল পুলিসবাহিনীও মোতায়েন রয়েছে। নামানো হয়েছে আধা সামরিক বাহিনীও। 

    কী ঘটেছিল এদিন? প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, যন্তরমন্তরে একটি চায়ের দোকানের সামনে শান্তভাবেই দাঁড়িয়েছিলেন ওই যুবক। কিছুক্ষণ পরেই সেখানে উত্তরপ্রদেশের সাফাই কর্মীদের একটি বিক্ষোভ শুরু হওয়ার কথা ছিল। সকলেই ভেবেছিলেন, ওই যুবক হয়তো সেই বিক্ষোভেই শামিল হতে এসেছেন। ভুল ভাঙে অচিরেই। পকেট থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে নিজের শরীরে গুলি চালিয়ে দেন ওই যুবক। উপস্থিত পুলিসকর্মীরা ছুটে আসেন। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে লোকেন্দ্রকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। 
  • Link to this news (বর্তমান)