বাংলার ভাগ ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে চলে যাচ্ছে, আর চলছে ঝুটা প্রচার: মমতা
বর্তমান | ১১ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: নিয়মিত প্রচার চলছে। সন্ধ্যায় টিভিতে চলা ধারাবাহিকের মাঝে দেওয়া হচ্ছে বিজ্ঞাপন। মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে ভেসে উঠছে সেই বিজ্ঞপন—‘স্বাস্থ্যবিমা থেকে জিএসটি প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্র!’ সোমবার ‘উত্তরকন্যা’য় ওই বিজ্ঞাপন নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কামান দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সংক্ষিপ্ত কটাক্ষ, ‘এটা ঝুট, রাজ্যের জিএসটি লুট। জিএসটি তুলে দেওয়া উচিত। রাজ্যের ট্যাক্স ফিরিয়ে দেওয়া উচিত রাজ্যকেই।’
৪ অক্টোবরের ভয়াবহ বিপর্যয়ের ৩৫ দিনের মধ্যে পরপর তিনবার উত্তরবঙ্গে এলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিপর্যয়ের পরই তিনি পাহাড়-সমতলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে উদ্ধার কাজ তদারকি করেন। পরে পাহাড় ও সমতলে বৈঠক করে বিপর্যয়ের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পর্যালোচনা ও পুনর্গঠনের কাজ তদারকি করেন। এবার তিনি উত্তরকন্যা থেকে রাজ্যের প্রতিটি জেলার সঙ্গে ভার্চুয়ালি সভা করে গৃহহারাদের বাড়িনির্মাণ এবং কৃষকদের সহায়তা প্রদান কর্মসূচির সূচনা করেন।
এই সভাতেই জিএসটি নিয়ে সরব হন মমতা। প্রথমে, জিএসটিকে সমর্থন করা নিয়ে তিনি নিজেরই সমালোচনা করেন। বলেন, ‘দেশের মধ্যে আমরাই প্রথম রাজ্য জিএসটিকে সমর্থন করেছিলাম। সেইসময় অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বুঝিয়েছিলেন, এটা হওয়া ভালো। তাই মেনে নিয়েছিলাম। এখন দেখছি, আমাদের ব্লান্ডার সিদ্ধান্ত ছিল। রাজ্যের সমস্ত ট্যাক্স নিয়ে চলে যাচ্ছে কেন্দ্র। কাজেই জিএসটি তুলে দেওয়া উচিত। জিএসটির নামে যা ইচ্ছে তাই করছে। কখনও সংবিধান, স্কুলের সিলেবাস চেঞ্জ করছে। আবার কখনও বাবা সাহেব আম্বেদকরের নামে বিতর্ক করছে।’
এতেই থেমে থাকেননি মমতা। তাঁর দাবি, ‘স্বাস্থ্যবিমার জিএসটি প্রত্যাহারে কেন্দ্রের কোনও ক্রেডিট নেই, পুরো ক্রেডিট রাজ্যের। এক্ষেত্রে আমাদের রাজ্যের কথাটাই বলতে পারি। স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা প্রদানে আমাদের খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।’ এমন তথ্য দেওয়ার পর কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ হানেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কটাক্ষ, ‘এখানে মিরজাফর, গদ্দার ও গোদিবাজদের কোনও ক্রেডিট নেই। এরা শুধু আমাদের টাকা ধ্বংস করছে আর অপপ্রচার করছে।’
মোদি সরকার রাজ্যের পাওনাও মেটাচ্ছে না বলে সরব হন মমতা। প্রশাসনিক সভা থেকে অনেকটা বাংলার ‘অগ্নিকন্যার’ রূপ নিয়ে মমতা বলেন, ‘কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা এখনও মেলেনি। তার উপর রাজ্য থেকে জিএসটি নিচ্ছে দিল্লি। বাংলাকে তার হকের পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। দিল্লি সেই টাকা দিচ্ছে ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিকে।’