• ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে লাস্যময়ীদের প্রেমের ফাঁদ, নিঃস্ব পাত্রপক্ষ
    বর্তমান | ১১ নভেম্বর ২০২৫
  • অলকাভ নিয়োগী, বিধাননগর: ঝকঝকে চেহারা। স্মার্ট, সুন্দরী ও লাস্যময়ী। এমন পাত্রীর ছবি দেখলে যে কোনও পাত্র প্রেমে পড়তে বাধ্য! ছবি দেখেই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর বিনিময়। প্রথমে বন্ধুত্ব। তারপর প্রেম। বিয়ের জন্য কথাবার্তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু বিয়ের জন্য কিছু ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তো করে রাখা  দরকার। নরম সুরেলা কণ্ঠে পাত্রী বলছেন, কোথায় কোথায় বিনিয়োগ করলে কত বেশি রিটার্ন! প্রেমিকা তথা হবু স্ত্রীর কথা কী ফেলা যায়! তাই হবু পাত্র বিনিয়োগ করে ফেললেন ‘অনলাইন প্রেমিকা’র কথামতো। কিন্তু, বিয়ের আগে টাকা তুলতে গিয়েই মাথায় হাত। রিটার্ন তো দূরের কথা, মিলছে না বিনিয়োগ করা অর্থও। আসলে ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে এভাবেই প্রেমের ফাঁদ পেতে প্রতারণা চালাচ্ছে লাস্যময়ী প্রতারকরা। ভুয়ো প্রোফাইলের পাত্রীদের ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে পাত্রপক্ষ।

    প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা নতুন নয়। এর আগে ফেসবুকে বন্ধুত্ব পাতিয়ে, প্রেমের টোপ দিয়ে একাধিক প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। তবে ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে এই ধরনের প্রতারণা নতুন। কীভাবে হচ্ছে এই প্রতারণা? সম্প্রতি বিধাননগরে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যেখানে পেশায় ব্যবসায়ী এক পাত্র তাঁর ‘অনলাইন প্রেমিকা’র কথায় কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছিলেন। পুলিশ জানতে পারে, প্রতারক তরুণীরা ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করছে। সাইটে এরকমই এক ঝকঝকে তরুণীর ছবি দেখে পছন্দ করেছিলেন বিধাননগরের ওই ব্যবসায়ী। তিনি প্রোফাইল থেকে তরুণীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর পান। তারপর দু’জনের মধ্যে দীর্ঘ কথাবার্তা চলে। প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। তারপরই ওই তরুণী হবু বরকে বলে, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য কিছু বিনিয়োগ করা দরকার। কয়েকটি ওয়েবসাইটে ডিজিটাল মুদ্রা তথা ক্রিপ্টো কারেন্সিতে বিনিয়োগ করতে বলে। তরুণীর বলে দেওয়া একটি অ্যাপও ডাউনলোড করেন ওই যুবক। তরুণী বলেছিল, সে গাইড করে দেবে। প্রেমিকার ভরসায় দু’মাস ধরে ওই যুবক ৯৯ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা অর্থাৎ প্রায় কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেন। তাঁর একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ৮৬ লক্ষ টাকা এবং অপর একটি থেকে ১৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করা হয়। যুবক টাকা তুলতে গিয়ে দেখেন, কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না! তখন বুঝতে পারেন, প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি। যে ওয়েবসাইট এবং অ্যাপের মাধ্যমে তিনি বিনিয়োগ করেছিলেন, সেগুলো সবই ভুয়ো। ওই অবস্থায় তিনি তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু, তাকে আর পাওয়া যায়নি। অন্য একটি নম্বর থেকে এক অপরিচিত তরুণী হোয়াটসঅ্যাপও করেছিল। সে নিজেকে পাত্রীর বোন বলে দাবি করে। তখন তিনি টের পান, প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছেন। তাঁর মাথায় হাত পড়ে। তিনি নাশন্যাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টং পোর্টালে প্রথমে অভিযোগ নথিভুক্ত করেন। তারপর বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তবে, কোটি টাকা হাতিয়ে লাস্যময়ী এখনও বেপাত্তা।
  • Link to this news (বর্তমান)