আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কাটা তেলের রমরমা কারবার প্রকাশ্যেই, নজরদারি নেই ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলার
বর্তমান | ১১ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বজবজ: ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলার নোদাখালি থানার গ্রামীণ অঞ্চল বিড়লা মোড়, বাওয়ালি ট্রেকার স্ট্যান্ড, বিড়লা মোড় থেকে ক্যালসিয়াম মোড়। এছাড়াও মুচিরপোল, নতুন রাস্তার মোড় থেকে ভিতরে যাওয়ার পথে একটি ‘কমন’ ছবি চোখে পড়বে সবার। রাস্তার উপর সার সার দোকানে বোতলে ভরে সাজানো রয়েছে কাটা তেল, অর্থাৎ পেট্রল পাম্প থেকে চোরাই পথে আনা পেট্রল বা ডিজেল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই কাটা তেল তথা পেট্রোল ও ডিজেলে এমন কিছু উপাদান মেশানো হয়, যা গাড়িতে ব্যবহার করা হলে বায়ুমণ্ডলের দূষণ ও শারীরিক ক্ষতিও হচ্ছে। তা সত্ত্বেও এর উপর প্রশাসন বা পুলিসের কোনও নজরদারি নেই।
বাওয়ালি ট্রেকার স্ট্যান্ড ও বিড়লা মোড়ে এই কাটা তেল বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, প্রচুর মানুষ এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের কথায়, এখান থেকে পাঁচ থেকে ছ’ কিলোমিটারের ভিতর কোথাও কোনও পেট্রল পাম্প নেই। ফলে আচমকা পেট্রল বা ডিজেল দরকার হলে তখন কোথায় যাবে মানুষ? জরুরি ভিত্তিতে কারও থেকে তেল ধার করলেও পাঁচ কিলোমিটার ঠেঙিয়ে পেট্রল পাম্পে যাওয়া-আসাতে অনেক টাকা বেরিয়ে যায়। এই ফাঁকটা পূরণ করছে এই কাটা তেল। প্রতি লিটারে দশ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়। তাতে দূর থেকে তেল আনার খরচ বেঁচে যায়। এই কারণে এলাকার বাসিন্দারাও কেনেন এই তেল। তবে পরিবেশবিদ সুজীব কর বলেন, এমনিতেই পেট্রল পাম্প থেকে নেওয়া পেট্রল ও ডিজেল ব্যবহারকারী গাড়ির ধোঁয়া থেকে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড বের হয়। কিন্তু বাইরের কাটা তেল ব্যবহার হলে এই বিষ কার্বন মনোক্সাইড নির্গমনের হার আরও চারগুণ বেড়ে যায়। এটা যত বেশি ব্যবহার হবে, ততই বিষ কার্বন কণা আরও বেশি করে বায়ুমণ্ডলে মিশবে। ফলে বায়ুমণ্ডলে ভাসমান ক্ষতিকর কণার পরিমাণও বাড়তে থাকবে, যা বাচ্চা থেকে বুড়ো মানুষের শ্বাসের সঙ্গে ঢুকে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ, এমনকী ক্যান্সারও তৈরি করতে পারে। শুধু তাই নয়, এর ফলে এই শীতের সময় ওইসব এলাকা জুড়ে ধোঁয়াশাও তৈরি হবে। ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলার ডিইবি সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক আগে কাটা তেলের বিরুদ্ধে অভিযান হয়েছিল। সম্প্রতি আর অভিযোগ আসেনি। তবে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নিজস্ব চিত্র