বাংলাদেশের স্কুলশিক্ষক দম্পতি ভারতের ভোটার! পদক্ষেপের দাবিতে সরব তৃণমূল-বিজেপি
প্রতিদিন | ১১ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব সংবাদদাতা, নদিয়া: এক দম্পতি দুই দেশের নাগরিক! বাংলাদেশের স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি ভারতের মাটিতে বসে সেখানকার সমস্ত সরকারি সুযোগসুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠল ওই দম্পতির বিরুদ্ধে। বিষয়টি সামনে আসতেই তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে নদিয়ার বগুলায়। দম্পতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছে তৃণমূল, বিজেপি-দু’পক্ষই।
অভিযোগকারী বধূ নদিয়ার কৃষগঞ্জের মাজদিয়া নাঘাটা এলাকার বাসিন্দা মৌসুমী বিশ্বাস। বছরখানেক আগে তাঁর বিয়ে হয় বগুলার কলেজ পাড়ার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের সঙ্গে। বিশ্বজিৎ কলকাতা কর্পোরেশনের কর্মী বলে দাবি বধূর। বিয়ের কয়েকদিন পর থেকেই স্বামীকে কোনও ওষুধ খেতে দেখে রোগ গোপন করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন মৌসুমী। তা নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরই মৌসুমী হাঁসখালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। জানান, তাঁর শ্বশুর সুনীল বিশ্বাস বাংলাদেশি। ননদ শিউলি বিশ্বাস ও তাঁর স্বামীও নাকি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ ওড়াকান্দির বাসিন্দা। পেশায় দুজনই স্কুলশিক্ষক। বধূর অভিযোগ, তাঁর ননদ ও ননদের স্বামী একাধারে বাংলাদেশের ভোটার আবার ভারতেরও ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম রয়েছে। শুধু তাই নয়, পরিচয় ভাঁড়িয়ে তাঁর ননদ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সহ রাজ্য সরকারের সমস্ত সুযোগসুবিধা নেন বলে অভিযোগ মৌসুমীদেবীর। তাঁদের দুই সন্তানকে নদিয়ার গাড়াপোতার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতি বছর তারা বহাল তবিয়তে এক ক্লাস থেকে অন্য ক্লাসে উঠে যাচ্ছে অথচ তারা বসবাস করে বাংলাদেশে, পড়াশোনাও করে বাংলাদেশে। গৃহবধূর আরও অভিযোগ, এসআইআর আবহে বধূর শ্বশুর সুনীল বিশ্বাস মেডিক্যাল ভিসা করে বাংলাদেশ থেকে বগুলার বাড়িতে এসে রয়েছেন।
বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। বধূর শাশুড়ি জবারানি বিশ্বাসের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাঁর কোনও মেয়ে নেই। দুই ছেলে আছে। অথচ, পাড়া-প্রতিবেশীরা সকলেই বলছেন, ওই মহিলার দুই ছেলে এক মেয়ে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা অনুপ দাস বলেন, “একই ব্যক্তি দুই দেশে বসবাস করছে, দুই দেশের সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে এটা ঘোরতর অন্যায়। প্রশাসন নিশ্চয়ই কড়া ব্যবস্থা নেবে।” বিজেপির জেলার নেতা অমিত প্রামাণিক বলেন, “যে আশঙ্কা করছিলাম সেটাই সত্যি প্রমাণ হল। এই জন্যই তো এসআইআর-এর প্রয়োজন। দুই দেশের নাগরিক হয়ে দুই দেশের সুযোগ সুবিধা নিচ্ছে।”