সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: শবর টোলায় ঘুরে ঘুরে বিএলওরা ওই জনজাতির মানুষজনের হাতে হাতে এনুমারেশন ফর্ম দিয়েছেন। কিন্তু এই আদিম জনজাতির মানুষজন নিজেদেরকে সরকারি নথিভুক্তকরণে সম্পূর্ণ উদাসীন! আর ওই ফর্মপূরণ না করলে গণতন্ত্রের অধিকার থেকেই বঞ্চিত হবেন। তাই জঙ্গলমহল পুরুলিয়াজুড়ে শবর জনজাতিদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এল পশ্চিমবঙ্গ খেড়িয়া-শবর কল্যাণ সমিতি।
সোমবার তাঁরা ওই সংগঠনের সদর দপ্তর কেন্দার রাজনওয়াগড়ে তাঁদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেন। সংশ্লিষ্ট বিএলওর কাছ থেকে ওই সংগঠনের কর্মকর্তারা জেনে তাঁদের কর্মীদেরকে হাতেকলমে শিখিয়ে দেওয়া হয় কীভাবে এনুমারেশন ফর্ম ফিলাপ করতে হবে। এই প্রশিক্ষণ কয়েকদিন চলবে। তবে এরমধ্যেই প্রশিক্ষিত কর্মীরা শবর টোলায় গিয়ে ওই জনজাতির মানুষদেরকে এনুমারেশন ফর্মপূরণে সহায়তা করবে।
এই জনজাতির মানুষদের যেমন নেই আধার কার্ড। তেমনই নেই ভোটার কার্ডও। এছাড়া অন্য নথিপত্র পাওয়া ভীষণ মুশকিল। ওই ফর্মপূরণ না করলে শুনানিতে তাঁদেরকে ডাকবে কী করে? আর তার প্রেক্ষিতে প্রশাসন বা কমিশন পদক্ষেপ নেবে কীভাবে যে তাঁরা গণতন্ত্রের শরিক হতে পারেন। তাই ওই ফর্মপূরণ করাতে জোর দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ খেড়িয়া-শবর কল্যাণ সমিতি।
সংগঠনের অধিকর্তা প্রশান্ত রক্ষিত বলেন, “সত্যি কথা বলতে শবর জনজাতি এখনও সমাজের মূল স্রোতে আসেনি। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় বাস করা এই মানুষ সেভাবে সভ্যতার আলোকেই দেখতে পাননি। এতটাই উদাসীন যে নিজেদেরকে সরকারি নথিভুক্তকরণে কোনও উদ্যোগই নেই। সমগ্র বিষয়টি আমাদেরকে দেখতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “যে এনুমারেশন ফর্ম বাড়ি বাড়ি দেওয়া হয়ে গিয়েছে, শবর জনজাতির মানুষ যাতে সঠিকভাবে পূরণ করতে পারেন সেজন্য সংগঠনের কর্মীদেরকে আমরা প্রশিক্ষণ দিলাম। মঙ্গলবার থেকে তাঁরা বিভিন্ন শহর টোলায় গিয়ে এই কাজ করবে। জনজাতির অধিকাংশ মানুষেরই ২০০২-র ভোটার তালিকায় নাম নেই। ফলতো তাঁদের বাবা-মা, ঠাকুরদার নামের নথিও দেখাতে পারেননি। কমিশন ১১টি যে নথির মান্যতা দিয়েছে সেই নথি নিয়ে আসা হলেও তা বাতিল করে দিচ্ছেন বিএলও। কারণ তা কমিশনের বিধি অনুযায়ী ১৯৮৭ সালের আগের নয়।”