সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথম দফার পর দ্বিতীয় দফাতেও রেকর্ড ভোট পড়ল বিহারে। বলা ভালো, প্রথম দফাকেও ছাপিয়ে গেল দ্বিতীয় দফা। বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত ভোটের হারের যে প্রাথমিক হিসাব নির্বাচন কমিশন দিচ্ছে, তাতে বিহারে দ্বিতীয় দফার ১২২ আসনে ভোট পড়েছে ৬৭.১৪ শতাংশ। যা পরে আরও বাড়বে। এর আগে বিহারে কোনওদিন এই হারে ভোট পড়েনি।
প্রথম পর্বেও রেকর্ড হারে ভোট পড়েছিল। প্রথম পর্বে ভোটের হার ছিল ৬৫ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ দুই পর্ব মিলিয়ে ৬৬-৬৮ শতাংশ ভোট পড়তে পারে বিহারে। যা সর্বকালের রেকর্ড। এর আগে ২০০০ সালে ভোট পড়েছিল ৬২ শতাংশ। এবার সেই হারকেও ছাপিয়ে গিয়েছে বিহার।রাজনৈতিক দলগুলি অঙ্ক কষতে ব্যস্ত, বাড়তি ভোটের হারে লাভটা কার? শাসক-বিরোধী দুই শিবিরই নিজেদের সাফল্য দাবি করছে।
ইতিহাস বলছে এর আগে যতবার ৫ শতাংশের বেশি ভোট বেড়েছে, প্রতিবারই সরকার বদল হয়েছে বিহারে। ১৯৬৭ সালে ভোট বেড়েছিল ৭ শতাংশ। ৪৪.৫% থেকে সেবার ভোট বেড়ে হয় ৫১.৫% শতাংশ। সেবার প্রথমবার কংগ্রেস হেরে প্রথম অকংগ্রেসি জোট সরকার গঠন হয়। ১৯৮০ সালে ভোটের হার ৫০.৫% থেকে বেড়ে হয় ৫৭.৩%। সেবারও ভোট বৃদ্ধি প্রায় ৭ শতাংশ। ক্ষমতা ফিরে পায় কংগ্রেস। ১৯৯০ সালে ৫৬.৩% থেকে ভোট বেড়ে হয় ৬২% শতাংশ। সেবার কংগ্রেসকে বিদায় দিয়ে প্রথমবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হন লালুপ্রসাদ যাদব।
এবার ভোটের হার বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ভোটের এই বাড়তি হার বদলের ইঙ্গিত কি? ভোট বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, কোনও রাজ্যে ভোটের হার বাড়ার অর্থ সেই রাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া বইছে। যদিও এই তত্ত্ব সবক্ষেত্রে ধ্রুব সত্যি ধরে নেওয়া যায় না। তবে বিহারের বিরোধীদের দাবি, এই ভোটের হারেই স্পষ্ট এনডিএর বিদায় এবার আসন্ন। বিহারের ভোট বিশেষজ্ঞরাও বলেন, ভোটের হার যত বেশি, পরিবর্তনের হাওয়া তত জোরাল।
এনডিএ শিবির অবশ্য প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার তত্ত্ব মানতে নারাজ। শাসক শিবির বলছে, বিহারের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ এই ভোটের হার। এটা প্রতিষ্ঠানের পক্ষের হাওয়া। মানুষের আস্থা এনডিএর উপর অটুট, আরও একটা তত্ত্ব অবশ্য আছে। সেটা হল, ভোটের হারের এই বৃদ্ধির নেপথ্যে SIR। ভোট বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, নির্ভুল ভোটার তালিকা ভোট শতাংশের হার বাড়িয়ে দেয়। বিহারেও তাই হয়েছে।