সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজধানীর বুকে এত বড় বিস্ফোরণ। যার অভিঘাতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন অনেকে। প্রশ্ন উঠছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নাকের ডগায় এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল কী ভাবে? অনেকেই এই ঘটনার দায় চাপাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপর। বিরোধীরা সরাসরি তাঁর পদত্যাগ দাবি করছেন। এরই মধ্যে হামলায় জড়িতদের খুঁজে বের করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দফায় দফায় বৈঠক করেছেন আধিকারিকদের সঙ্গে। একটাই নির্দেশ, যেভাবেই হোক খুঁজে বের করতে হবে দোষীদের।
দিল্লিতে বিস্ফোরণের তদন্তভার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ইতিমধ্যেই তুলে দেওয়া হয়েছে এনআইএ-র হাতে। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁর বাসভবনে স্বরাষ্ট্রসচিব, আইবি ডিরেক্টর, এনআইএ-র ডিজি, দিল্লির পুলিশ কমিশনার-সহ (জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশকর্তা যোগ দিয়েছিলেন ভার্চুয়ালি) অন্যান্য আধিকারিকরাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একাধিক রাজ্যের সঙ্গে এই বিস্ফোরণের যোগ পাওয়া গিয়েছে। যার জেরেই এমন পদক্ষেপ। পরে বিকালে আরও একবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন শাহ। সকালের বৈঠকে শীর্ষ নিরাপত্তা আধিকারিকরা তদন্ত নিয়ে বিস্তারিত আপডেট তুলে ধরেন। এরপর বিকেলের বৈঠকেও তাঁরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তদন্তের সর্বশেষ আপডেটও তুলে ধরা হয়।
দফায় দফায় বৈঠকের পর এক্স হ্যান্ডেলে শাহ লেখেন, “দিল্লির গাড়িবোমা বিস্ফোরণ নিয়ে রিভিউ মিটিংয়ের সভাপতিত্ব করলাম। শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আধিকারিকদের এই ঘটনার নেপথ্যে জড়িত প্রত্যেক দোষীকে খুঁজে বার করার নির্দেশ দিয়েছি। তারা এ বার আমাদের তদন্তকারী সংস্থাগুলির ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ দেখবে।” বস্তুত দিল্লির হামলাকে এখনও জঙ্গি কার্যকলাপ না ঘোষণা করা হলেও শাহের এই হুঙ্কার সেদিকেই ইঙ্গিত করছে।
সূত্রের খবর, হামলার নেপথ্যে রয়েছে জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। যদিও কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী এখনও পর্যন্ত হামলার দায়স্বীকার করেনি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের আগে সুনহেরি মসজিদের পার্কিং লটে ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করছিল গাড়িটি। ঘাতক গাড়ির সূত্র ধরে ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে দুই সন্দেহভাজনকে। এদিকে বিস্ফোরণের আগে ঘাতক গাড়িটি প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। পুরো বিষয়টিই খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ গাড়িটি প্রথমবার বিক্রি হয়। কেনেন জনৈক সলমন। পরে তিনি গাড়িটি দিয়ে দেন দেবেন্দ্রকে। তবে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া ছাড়াই। পরে সেখান থেকে মালিকানা বদল হয় সোনুর কাছে। এরপর গাড়িটি যায় তারিকের কাছে। কিন্তু গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে কোনও বদল হয়নি। তবে এই প্রক্রিয়ায় ফরিদাবাদের এক গাড়ি বিক্রেতার নামও জড়িয়ে গিয়েছে। ফরিদাবাদ থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে নাদিম খান নামের ওই ব্যক্তিকে। তাঁকে জেরা করেই তারিকের কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা।