সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলা-সহ একাধিক রাজ্যে SIR প্রক্রিয়া যখন মধ্যগগনে, তখনই রাজনৈতিক দলগুলির বুথ লেভেল এজেন্ট অর্থাৎ বিএলএ নিয়োগের নিয়মে বড়সড় বদল করল নির্বাচন কমিশন। বিএলএ সংক্রান্ত ২০২৩ সালের গাইডলাইন বদলে দেওয়া হল। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। শাসকদলের স্পষ্ট বক্তব্য, বিজেপির ইশারাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আগে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম ছিল, কোনও বুথের বিএলএ-কে সেই বুথেরই বাসিন্দা হতে হবে। কিন্তু কমিশন নতুন নিয়ম করে জানিয়ে দিল, বিএলএ’র আর ওই নির্দিষ্ট বুথের বাসিন্দা হওয়া বাধ্যতামূলক নয়। সংশ্লিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা হলেই বুথের বিএলএ হওয়া যাবে। এছাড়া নিয়োগপ্রাপ্ত বুথ লেভেল এজেন্ট সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের খসড়া ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে এবং মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারদের নাম চিহ্নিত করতে পারবেন। সেটাও লিখিত আকারে জানাল কমিশন। কমিশনের নির্দেশিকায় স্পষ্ট, মূলত যে রাজ্যে বিরোধীরা সাংগঠনিকভাবে দুর্বল, সব বুথে বিএলএ দেওয়ার মতো জায়গায় নেই, তাঁদের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কমিশনের এই নতুন নিয়মে ক্ষুব্ধ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের বক্তব্য, “নির্বাচন কমিশন খুব ধূর্ততার সঙ্গে বিএলএ নিয়োগের নিয়ম বদলে দিয়েছে। এখানে একটা বড় প্রশ্ন উঠে যায়, নিয়ম অনুযায়ী বিএলও-দের সংশ্লিষ্ট বুথের বাসিন্দা হতেই হবে, তাহলে বিএলএদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেন? কারণ বিজেপি বুথে বুথে এজেন্ট খুঁজে পাচ্ছে না। তাই বহিরাগতদের এজেন্ট হিসাবে আনতে চাইছে।” তৃণমূলের তোপ, যে কমিশন একসময় স্বাধীন ছিল, তারা যে বিজেপির দলদাসে পরিণত হয়েছে, এটা তার আরও প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
এদিকে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধে পর্যন্ত সাড়ে ছ’কোটির বেশি ফর্ম বিলি করেছেন বিএলও-রা। অর্থাৎ, মোট ভোটারের ৮৩ শতাংশের হাতে ফর্ম পৌঁছেছে বলে দাবি। এদিন পর্যন্ত পাঁচ লক্ষ ভোটার অনলাইনে ফর্ম পূরণ করেছেন। বহু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলির এজেন্ট বিএলএ-রা রয়েছেন। সব দল মিলিয়ে রাজ্যে দেড় লক্ষের কাছাকাছি বিএলএ-২ ফর্ম পেয়েছে কমিশন। এর মধ্যে তৃণমূলের সংখ্যা বেশি, ৫৪ হাজার ১৪৯। বিজেপির ৪৮ হাজার ২৩ ও সিপিএমের ৩৫ হাজার ৬৮৬, কংগ্রেসের ১০ হাজার ১২৪। এটা স্পষ্ট যে রাজ্যে বিরোধীদলগুলি নির্দিষ্ট বুথে এজেন্ট পাচ্ছে না। সংগঠনের দুর্বলতাই বড় কারণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রথমদিকে বিজেপি তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর দিলেও যত দিন যাচ্ছে পিছিয়ে পড়ছে।