দিল্লি হামলায় সতর্ক কলকাতা পুলিশ, প্রতিটি গাড়িতে তল্লাশি, এলাকা ধরে ধরে নজরদারির নির্দেশ লালবাজারের
প্রতিদিন | ১২ নভেম্বর ২০২৫
অর্ণব আইচ: দিল্লিতে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের জের। একেকটি থানা এলাকায় একাধিক নাকা চেকিং করে পুলিশকে সব গাড়ি পরীক্ষা করার নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার। প্রত্যেকটি গাড়ির ডিকি পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও কোনও জায়গায় বেওয়ারিশ গাড়ি পড়ে থাকলে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এমনকী, লাল বাতি ও নীল বাতির গাড়িতেও কে বা কারা রয়েছেন, তাঁরা কোথায় যাচ্ছেন, তা-ও নাকা চেকিংয়ের দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকদের জানার নির্দেশ দিলেন লালবাজারের কর্তারা।
লালবাজারের সূত্রের খবর, থানার আধিকারিক ও পুলিশকর্তাদের সতর্ক করে জানানো হয়েছে যে, আগেও একাধিক আইএসআই মডিউলের সন্ধান মিলেছিল। পাক চর সংস্থা আইএসআই যাতে কোনওভাবে কলকাতায় নাশকতার ছক না কষতে পারে, সেই ব্যাপারে পুলিশ আধিকারিকদের সতর্ক করেছে লালবাজার। শহর ও তার আশপাশের বিশেষ কয়েকটি জায়গা চিহ্নিত করে কড়া নজরদারির ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে। কোনও এলাকায় নতুন কোনও ব্যক্তি ঘোরাঘুরি করলে তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিতে হবে। কোনও ব্যক্তির ব্যাপারে সন্দেহজনক কোনও তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গেই ওই ব্যক্তিকে আটক করে জেরা ও তাঁর বাড়িতে তল্লাশি করতে হবে। এই ব্যাপারে সময় নষ্ট করা যাবে না, পুলিশ আধিকারিকদের এমনই নির্দেশ লালবাজারের।
সোমবারই দিল্লিতে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের পর মঙ্গলবার প্রত্যেকটি থানা ও ট্রাফিক গার্ডকে সতর্ক করল লালবাজার। এদিন কলকাতার প্রত্যেকটি থানা, ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বৈঠক করেন পুলিশ কমিশনার ও লালবাজারের কর্তারা। ট্রাফিক গার্ড ও থানার ওসিদের পুলিশকর্তাদের নির্দেশ, একেকটি থানা এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় একাধিক নাকা চেকিং এমন ‘স্ট্র্যাটেজি’তে করতে হবে, যাতে কোনও গাড়িই পুলিশের নজর এড়িয়ে না পালাতে পারে। সব গাড়ির ডিকি ও ভিতরের অংশ পরীক্ষা করতে হবে। ডিকিতে কোনও সন্দেহজনক বস্তু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এমন আঁচ পেলে সঙ্গে সঙ্গে সেগুলি পরীক্ষা করতে হবে। এমনকী, কোনও গাড়িতে নীল বাতি বা লাল বাতি লাগানো থাকলেও গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসা করতে হবে, সেই গাড়িতে কে রয়েছেন, তিনি কোথায় যাচ্ছেন। ওই গাড়িতে যদি কোনও ভিআইপি না থাকেন, তবে কে আছেন, তা-ও পুলিশ আধিকারিকদের জানতে বলা হয়েছে।
কোনও পুরনো মডেলের গাড়ির যদি নতুন নম্বরপ্লেট দেখা যায়, তবেও পুলিশকে সতর্ক হতে হবে। সন্দেহজনক গাড়ির নম্বরপ্লেট আসল না জাল, প্রয়োজনে সেই পরীক্ষাও করতে হবে পুলিশ আধিকারিকদের। অনেক সময়ই কোনও গাড়ি ভুয়ো নম্বরপ্লেট ব্যবহার করতে গিয়ে সামনে ও পিছনে আলাদা আলাদা নম্বরপ্লেট বসিয়ে দেয়। সেদিকেও পুলিশকে নজর রাখতে হবে। কোনও চোরাই গাড়ি বা জাল নম্বরপ্লেটের গাড়ি করে যাতে কোনও সন্দেহজনক বস্তু পাচার না হতে পারে, সেদিকেও কড়া পুলিশ। বেওয়ারিশ গাড়ি নিয়েও থানা ও ট্রাফিক গার্ডগুলিকে পুলিশ সতর্ক করেছে। রাস্তার ধারে বা পার্কিংয়ে বেশি সময়ের জন্য কোনও গাড়ি থাকলে তার উপর নজর দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। হোটেলগুলিতে বোর্ডারদের বিস্তারিত তথ্য নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।