তৃণমূলের সংবিধানের কোন ধারায় আমি সাসপেন্ড হয়েছি? বাড়ি ফিরে মমতাকে চিঠি পার্থের! প্রতিলিপি অভিষেক-সুব্রতকেও
আনন্দবাজার | ১১ নভেম্বর ২০২৫
মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি ফিরেছেন। সন্ধ্যায় জানা গেল, তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছেন জেলফেরত পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ওই চিঠির প্রতিলিপি গিয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর কাছেও। চিঠিতে পার্থের প্রশ্ন, তাঁকে দল সাসপেন্ড করে থাকলে সেটা দলের কোন নিয়মবলে করা হয়েছে।
চিঠির এক জায়গায় পার্থ জানিয়েছেন, তিনি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছেন যে, তৃণমূল তাঁকে সাসপেন্ড করেছে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দলীয় সংবিধানের কোন ধারায় আমাকে সাসপেন্ড করা হল?’’ ওই চিঠিতে অভিষেককে ‘নব্য সেনাপতি’ বলে উদ্ধৃত করেছেন তৃণমূলের একদা মহাসচিব। তাঁর আক্ষেপ, একই রকম অভিযোগে অভিযুক্ত দলীয় নেতাদের পাশে দল বহু বার দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তার বেলা কেন অন্যথা হল।
পার্থের অনুগামীদের একাংশের দাবি, জেলবন্দি অবস্থাতেই ওই চিঠিটি লেখেন ‘দাদা।’ নাকতলার বাড়ি ফিরে সেই চিঠি স্রেফ তৃণমূলনেত্রীর দফতরের ঠিকানায় পাঠিয়েছেন। তবে ঘনিষ্ঠদের অন্য অংশের দাবি, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই ওই চিঠি লিখেছিলেন পার্থ। জামিনে বাড়ি ফেরার পর সেই খবরই প্রকাশ্যে এসেছে।
২০২২ সালের ২৩ জুলাই শিক্ষক নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় পার্থকে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। অর্পিতার টালিগঞ্জের এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৫০ কোটি টাকা। পার্থের গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাঁকে মন্ত্রিত্ব-সহ দলের সমস্ত পদ থেকে সরানোর দাবি উঠছিল। অবশেষে গ্রেফতার হওয়ার ছ’দিনের মাথায় সরকার এবং দল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকে দল থেকে তাঁকে সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখন অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘তদন্ত যতদিন না শেষ হবে, ততদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় দল থেকে সাসপেন্ড থাকবেন। উনি আইনের চোখে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে পারলে তখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
আর মন্ত্রিত্ব নেই পার্থের। তবে এখনও বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ। মঙ্গলবার বাড়ি ফিরে পার্থ জানিয়েছেন, বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে নির্দল বিধায়ক হিসাবে যোগদান করে বক্তৃতা করতে চান। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘আমি বেহালা পশ্চিমের (বিধানসভা) মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। যাঁরা আমাকে সৎমানুষ মনে করেন, পর পর পাঁচ বার নির্বাচনে জিতিয়েছেন, আমি তাঁদের কাছেই বিচার চাইতে যাব।’’