• অন্তত ৬০ ভোটারের বাবা এক! নবদ্বীপে গুরুই পিতা, ভক্তদের ‘ভোট-ভাগ্য’ নির্ধারণে কমিশন
    আনন্দবাজার | ১১ নভেম্বর ২০২৫
  • ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে রাজ্য জুড়ে নানা ঘটনা, হরেক বিতর্ক অব্যাহত। এই প্রেক্ষিতে এসআইআর নিয়ে হুলস্থুল ঘটনা নদিয়ার মায়াপুরে। সেখানে অন্তত ৬০ জন ভোটারের বাবার নাম এক— জয়পতাকাস্বামী দাস। এত জন ভোটারের অভিভাবক কী ভাবে এক জন কিংবা একই নাম হয়, তাই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। বিতর্কের শিকড় খুঁজতে গিয়ে পৌঁছতে হল মায়াপুর ইসকনে।

    মায়াপুরের ইসকনের অনেক ভক্ত ৭৭ নম্বর নবদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রের ১০ নম্বর অংশে ঠাকুর ভক্তিবিনোদ নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন। এঁদের প্রায় সকলেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় অভিভাবকের নামের জায়গায় লিখেছিলেন জয়পতাকাস্বামী দাসের নাম। সম্পর্কের জায়গায় লেখা, পিতা। এখন ভোটার তালিকা সংশোধন হলে তাঁদের সকলেরই নাম বাদ যাবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগে ইসকনের ওই ভক্তরাই। যদিও প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না কেউ-ই। ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিকগৌরাঙ্গ দাস জানাচ্ছেন, এ নিয়ে যা করার নির্বাচন কমিশনই করবে। তিনি বলেন, ‘‘বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) এবং বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ) খতিয়ে দেখে বিষয়টি বলতে পারবেন।’’

    কিন্তু কেন বা কী ভাবে এক জন এত জনের অভিভাবক হলেন? ইসকনের একটি সূত্রের দাবি, সনাতন মতে সন্ন্যাস গ্রহণের পর বহু ভক্ত সংসার ত্যাগ করেন। তাঁরা তখন ‘গুরু মহারাজ’-কেই নিজেদের অভিভাবক হিসাবে গ্রহণ করেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের সচিত্র পরিচয়পত্রে ‘গুরু মহারাজ’-এর নাম ‘পিতা’ হিসাবে লেখা হয়ে থাকে। একে ভুলের বদলে ধর্মীয় প্রথা হিসেবেই দেখা উচিত।

    অন্য দিকে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অফিসের একটি সূত্র মারফত খবর, একটি নির্দেশিকায় কমিশন এমন সম্পর্ককে মেনে নেওয়ার কথা বলেছে। অর্থাৎ, ‘গুরু মহারাজ’কে ‘পিতা’ হিসাবে গণ্য করা যেতেই পারে। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অরিন্দম নিয়োগীর কথায়, ‘‘যে কোনও সম্পর্ক লেখা যেতে পারে। তবে এই বিষয়ে শুনানি হবে। আপাতত সমস্যা দেখছি না।’’ অর্থাৎ, মায়াপুরের ওই ভক্তদের ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। কিন্তু বিপুল সংখ্যক ভোটারের অভিভাবকের নাম এক হওয়ার নদিয়ার রাজনৈতিক মহলেও চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)