এ বার নদিয়ায় ‘এসআইআর আতঙ্কে’ মৃত্যু বৃদ্ধের! সব নথি থাকলেও ২০০২-এর তালিকায় নাম ছিল না, দাবি পরিবারের
আনন্দবাজার | ১১ নভেম্বর ২০২৫
ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা ‘এসআইআর নিয়ে আতঙ্কে’র কারণে ফের মৃত্যুর অভিযোগ রাজ্যে। নদিয়ার তাহেরপুরে ৭২ বছর বয়সি এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। ওই বৃদ্ধের নাম শ্যামলকুমার সাহা। তাঁর পরিবারের সদস্যদের দাবি, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড-সহ বৈধ সমস্ত কাগজপত্র থাকলেও ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না শ্যামলের। তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন বৃদ্ধ। সোমবার তাঁর মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এক সময় বাংলাদেশে থাকতেন শ্যামল। তবে ৩০ বছর ধরে তিনি নদিয়ার তাহেরপুর থানার অন্তর্গত কালীনারায়ণপুর পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণচকপুর মণ্ডলপাড়ায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন। পেশায় ফেরিওয়ালা শ্যামল বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে কম্বল বিক্রি করতেন। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, দুই পুত্র এবং দুই পুত্রবধূ রয়েছেন। শ্যামলের দুই পুত্রই পেশায় রাজমিস্ত্রি। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই চিন্তায় ছিলেন ওই বৃদ্ধ। এক প্রতিবেশীর কথায়, “উনি বলতেন আমার ছেলেদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমি আর বাঁচতে চাই না।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, এসআইআর নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক রয়েছে। শুধু শ্যামল নয়, এলাকার অনেকেরই ২০০২-এর ভোটার তালিকায় নাম নেই। পরিবারের দাবি, কয়েক দিন ধরেই অবসাদে ভুগছিলেন শ্যামল। দুশ্চিন্তা থেকেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। এলাকার স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এই প্রসঙ্গে বলেন, “প্রশাসনের উচিত এই ধরনের আতঙ্কের অবসান ঘটাতে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া। যাতে আর কোনও নিরপরাধ মানুষ এমন ভাবে প্রাণ না হারান।”
গত ২৭ অক্টোবর রাজ্যে এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পর থেকে সব মিলিয়ে ১৬ জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতরও শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এসআইআর নিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, সরকারি নির্দেশে কেউ নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন না। কিন্তু সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বিজেপিই।